পুরো ফিট না হয়ে ইঞ্জেকশন নিয়ে খেলেন ক্রিকেটাররা, স্টিং অপারেশনে বললেন চেতন শর্মা

চেতন শর্মা বলেছেন, ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা ফিট হওয়ার জন্য নিষিদ্ধ ইঞ্জেকশন নেন। এবং ৮০ শতাংশ ফিট থাকলেও, ইঞ্জেকশন নিয়ে ১০০ শতাংশ ফিট হয়ে যান।

চেতন শর্মা।

ভারতের প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মা ঘটালেন একের পর এক বিস্ফোরণ। জি নিউজের পক্ষ থেকে একটা স্টিং অপারেশন চালানো হয়েছিল। সেই স্টিং অপারেশন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে চেতন শর্মার একের পর বিস্ফোরক দাবি। চেতন শর্মা দাবি করেছেন, ভারতীয় দলের অনেক ক্রিকেটারই ১০০ শতাংশ ফিট থাকার জন্য নিষিদ্ধ ইঞ্জেকশন নেন।

চেতন শর্মার বক্তব্য অনুযায়ী, ভারতীয় দলে সবচেয়ে ফিট প্লেয়ার বিরাট কোহলিও কি তবে নিষিদ্ধ ইঞ্জেকশন নেন? চেতন শর্মা বলেছেন, ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা ফিট হওয়ার জন্য নিষিদ্ধ ইঞ্জেকশন নেন। এবং ৮০ শতাংশ ফিট থাকলেও, ইঞ্জেকশন নিয়ে ১০০ শতাংশ ফিট হয়ে যান।

এই ইঞ্জেকশনগুলো আসলে কীসের জন্য নেওয়া হয়?

এই ইঞ্জেকশন গুলিতে রয়েছে নিষিদ্ধ ড্রাগ। পেইনকিলার মোটেও নয়। মজার বিষয় নাকি, সেই ড্রাগ ডোপও টেস্টে ধরা পড়ে না। খুব স্বাভাবিক ভাবে চেতন শর্মার এ হেন বক্তব্য বিশ্ব ক্রিকেটে রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছে।

চেতন শর্মাকে এমনও বলতে শোনা গিয়েছে, বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার, যাঁরা নাকি খারাপ পারফরম্যান্স করছে, তাঁরাও স্কোয়াডে থাকার জন্য ইঞ্জেকশনের ব্যবহার করে থাকছেব। এমন কী জসপ্রীত বুমরাহ, যিনি খেলার জন্য পুরোপুরি ফিট ছিলেন না, তাঁকেও ইঞ্জেকশনের সাহায্যে খেলতে বাধ্য করা হয়েছিল।

ভিডিয়োয় চেতনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘এক জন ক্রিকেটারের উপর প্রতি মুহূর্তে নজরে রাখা সম্ভব নয়। তাই কে ইঞ্জেকশন নিচ্ছে তা প্রমাণ করা সম্ভব নয়। দেশের অনেক খেলোয়াড়ের মধ্যেই এই রকম প্রবণতা তৈরি হয়েছে। প্রথম সারির অনেক ক্রিকেটারও পুরো ফিট হতে ইঞ্জেকশন নিয়ে খেলছে। এই ধরনের ইঞ্জেকশনে ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়ার ভয় থাকে না।’

রোহিত-কোহলি সম্পর্ক

শুধু ক্রিকেটারদের নিষিদ্ধ ইঞ্জেকশন ব্য়বহারেই থেমে যাননি চেতন শর্মা। বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়েও কথা বলেছেন চেতন শর্মা। তাঁর মতে, বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার মধ্যে নাকি কোনও বিরোধ নেই। তবে দু'জনের মধ্যে কিছুটা ইগোর সমস্যা রয়েছে। রোহিত এবং কোহলির সম্পর্ককে ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তুলনা করেছেন চেতন শর্মা।

সৌরভ-কোহলি আকচাআকচি

দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট খেলতে যাওয়ার আগে এক সাংবাদিক বৈঠকে বিরাট বলেছিলেন যে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নেতৃত্ব ছাড়ার সময় তাঁকে কেউ বাধা দেননি। যদিও তার কিছু দিন আগেই সৌরভ জানিয়েছিলেন, তিনি নিজে বিরাটকে অনুরোধ করেছিলেন নেতৃত্ব না-ছাড়ার জন্য। সেই সময় থেকেই সৌরভ এবং বিরাটের মধ্যেকার ইগোর লড়াই বা সম্পর্কের অবনতি নিয়ে জল্পনা বাড়তে থাকে। যদিও দু’জনের কেউই এই নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। এই প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলতে শোনা যায় চেতনকে।

ক্যামেরায় তোলা যে ভিডিয়ো সামনে এসেছে সেখানে প্রশ্নকর্তাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘দু’জনের মধ্যে কে সত্যি বলছে?’ জবাবে চেতনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘সৌরভ নেতৃত্ব না ছাড়ার কথা বিরাটকে বলেছিল।’

প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিরাট কোহলির মধ্যে যে তীব্র সমস্যা দেখা দিয়েছিল, এবং যা নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছিল, সেই বিষয়েও চেতন শর্মা ছিলেন অনর্গল। চেতন শর্মার দাবি, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নন, বিরাট কোহলিকে অধিনায়কের পদ থেকে সরানোর ব্যাপারে নির্বাচকদের ভূমিকায় বেশি ছিল। স্টিং অপারেশনের ক্যামেরায় চেতন শর্মা কোহলিকে মিথ্যাবাদী বলে অভিযুক্ত করেছেন। এবং এটাও বলেছেন, কোহলিকে নেতৃত্ব ছেড়ে না দেওয়ার কথা বলেছিলেন সৌরভ। এই নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়ার বিষয়টা কোহলির ইগোতে আঘাত করেছিল। তার ফলে সাংবাদিক সম্মেলনে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দোষারোপ করেছিলেন বিরাট কোহলি। কোহলি ভেবেছিলেন সৌরভের কারণেই তাঁর নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় সাংবাদিক সম্মেলনে সৌরভকে দোষারোপ করেন।

চেতনকে স্টিং অপারেশনের ওই ভিডিয়োয় বলতে শোনা গিয়েছে, ‘সৌরভ এবং বিরাটের মধ্যে একটা ইগোর লড়াই ছিল। সৌরভ এক সময় ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বিরাট সেই সময় নেতা ছিলেন। কে বড় তা নিয়ে একটা লড়াই ছিল।’