লভলিনা বড়গোহাঁইকে নিয়ে এক রঙিন স্বপ্নে ডুবে রয়েছে অসম। আর লভলিনাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখাটা তো স্বাভাবিক। তাঁর হাত ধরেই তো প্রথম অলিম্পিক্স পদক জয়ের স্বাদ পেতে চলেছে অসম। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর গ্রাম বারোমুখিয়াতে এখন উৎসবের মেজাজ।
অসমের এক ছোট্ট গ্রাম বারমুখিয়াতে জন্ম লভলিনার। সেই গ্রামে থেকেই অলিম্পিক্সের মঞ্চে পদক জয়ের স্বপ্নের জাল বুনেছিলেন ২৩ বছরের বক্সার। তাঁর অলিম্পিক্সে পদক জয়ের স্বপ্নটা সত্যি করে তিনি বদলে দিতে চলেছেন তাঁর গ্রামকেও।
লভলিনার গ্রামের রাস্তা কাঁচা মাটির। একটু বৃষ্টি হলেই একেবারে কাদায় পা ডুবে যায়। সেই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা প্রবল সমস্যার হয়ে দাঁড়ায়। এত দিন কারও টনক নড়েনি। কিন্তু লভলিনার সাফল্য এক মুহূর্তে পুরো পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে।
এখন লভলিনার গ্রামের রাস্তা পাকা করার কাজ জোরকদমে চলছে। পিডব্লুডি ইতিমধ্যে কাজে লেগে পড়েছে। যাতে লভলিনা বাড়ি ফেরার আগে পুরো রাস্তা যান চলাচলের যোগ্য হয়ে ওঠে, সেটাই আপাতত লক্ষ্য। অলিম্পিক্সের পদকজয়ী কী আর কাদা রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন! গোলাঘাট জেলার সরুপাথরের অন্তর্গত হল বারমুখিয়া গ্রাম। সরুপাথরের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ ফুকান বলেছেন, ‘আমাদের এই এলাকায় এ বার খরা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু লভলিনা কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে জেতার পরই খুবই বৃষ্টিপাত হয়। এবং ওঁর গ্রামের বাড়ি যাওয়ার রাস্তা একেবারে কাদা কাদা হয়ে যায়। এবং যান চলাচলেরও অযোগ্য হয়ে ওঠে।’
এরই সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে কথা বলি এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ওই রাস্তাকে খুব দ্রুত যান চলাচলের যোগ্য করে তোলা হবে। লভলিনা টোকিও থেকে ফেরার আগেই এই রাস্তা মেরামত করে যান চলাচলের যোগ্য করে তোলাটাই আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। তবে বর্ষা শেষ হয়ে গেলেই রাস্তাটি ভাল ভাবে পুরো পাকা করে ফেলা হবে।’
লভলিনার গ্রাম বারপাথর থেকে আরও তিন কিলোমিটার ভিতরে। বারপাথরই তাঁর গ্রাম থেকে সবচেয়ে কাছের একটি শহর। তাঁর বাড়ি যাওয়ার প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তায় এখন পাথর-কাঁকর ফেলা রয়েছে। শেষ ৬০০ মিটার এখনও একেবারে কাদায় ভরা। যেটা মেরামতির কাজ চলছে। লভলিনার বাবা টিকেন বড়গোহাঁই বলেছেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে আমাদের এখানে রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। গত বছর যখন লভলিনা অলিম্পিক্সের জন্য যোগ্যতা অর্জন করল, তখন গোলাঘাটের ডেপুটি কমিশনার আমাদের বাড়ি এসেছিলেন, এবং ভরসা দিয়েছিলেন, এই রাস্তা তিনি ঠিক করে দেবেন। কিছু বালি আর পাথর ফেলাও হয়েছিল। এই পর্যন্ত। তার পর আর কিছু হয়নি।’
এরই সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, ‘শুক্রবার লভলিনা সেমিফাইনালে ওঠার পর স্থানীয় বিধায়ক ফুকান ফোন করেছিলেন। তিনি ভরসা দিয়েছেন, রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। আমাদের বাড়ির সামনে থেকে কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। আমরা তাই খুশি।’ প্রসঙ্গত, শুক্রবার চাইনিজ তাইপেইয়ের চেন নিয়েন-চিনকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে পদক নিশ্চিত করেছেন লভলিনা বড়গোহাঁই।