১০৩টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে যে প্লেয়ারের, তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়াটা কখনও-ই খুব সহজ বিষয় ছিল না। পূজারা তাঁর দীর্ধ ১৩ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রায় চার বার একাদশ বা স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন। এবং প্রতি বারই তিনি প্রত্যাবর্তনও করেছেন। তবে পঞ্চম বার টেস্ট টিম থেকে বাদ পড়াটা কি একেবারেই অন্য রকম হতে চলেছে? অনেক ক্রিকেট ভক্তই মনে করছেন, পূজারা শেষ টেস্ট খেলে ফেলেছেন। তবে পূজারা দলে ফিরতে মরিয়া হয়েই থাকবে। তিনি এই বিষয়ে বেশ একগুঁয়ে। সেই কারণে তিনি সম্ভবত ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলবেন। দলীপ ট্রফিতে অংশ নেবেন বলে জানা গিয়েছে।
২০১২ সালে অগস্ট মাসে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হোম সিরিজে ভারতীয় টেস্ট দলে তাঁর নিশ্চিত করেছিলেন পূজারা। এর পর ২০১৪-১৫ সালে তিনি প্রথম বার ভারতীয় টেস্ট একাদশে তাঁর জায়গা হারান, যখন সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বর্ডার-গাভাসকর সিরিজের শেষ টেস্টের জন্য তাঁকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে হয়। এক বছর পরে, ওয়েস্ট ইন্ডিজে তাঁকে আবার একাদশ থেকে বাদ দেওয়া হয়, যখন পূজারার স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন তৎকালীন অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
২০১৮ সালের ইংল্যান্ড সফরে পূজারার বদলে কেএল রাহুলকে ওপেনার হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। পূজারা আবারও দলে প্রত্যাবর্তন করেন এবং পরের কয়েক বছর ধরে ঘরের মাঠে এবং অস্ট্রেলিয়ার দু'বার পরপর দুই সফরে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সও করে। যে সিরিজগুলিতে ভারত জিতেছিল।
আরও পড়ুন: ঘরোয়া ক্রিকেট ভালো খেলে আর লাভ নেই- সরফরাজকে বাদ দেওয়ায় চটে লাল প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার
চতুর্থ ধাক্কাটি পূজারা খায় ২০২২ সালে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পরে তাঁকে এবং অজিঙ্কা রাহানেকে টেস্ট স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়া হয়। পূজারা অবশ্য কাউন্টি ক্রিকেটে ফিরে যান এবং সাসেক্সের হয়ে খেলেন। কাউন্টিতে তিনি ভালো পারফরম্যান্স করে ২০২২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের জন্য ডাক পান এবং এই বছর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে ১০০ টেস্টের মাইলফলক পূর্ণ করার সুযোগ পান।
কিন্তু পুজারা এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। বাংলাদেশের বিপক্ষে যদি তাঁর ৯০ এবং ১০২ রানের ইনিংসগুলো বাদ দেওয়া হয়, তবে গত তিন বছরে তিনি ২৬ গড়ে স্কোর করেছেন।
আরও পড়ুন: অদূরদর্শী আর বোকার মতো সিদ্ধান্ত- রাহানেকে সহ-অধিনায়ক করা নিয়ে জোর বিতর্ক নেটপাড়ায়
গত তিন বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেটে একই রকম খারাপ পারফরম্যান্স সত্ত্বেও, কেন বিরাট কোহলির সঙ্গে পূজারার মতো আচরণ করা হয়নি, সেই প্রসঙ্গে বিসিসিআই-এর এক সূত্র পিটিআই-কে বলেছেন, কোহলিকে দেখে কখনও-ই মনে হয়নি তিনি একেবারে ফর্মের বাইরে রয়েছেন।
সেই সূত্রের দাবি, ‘বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ দুই বছরের একটি চক্র। আর এখানে পাইকারি হারে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। পূজারা তিন বছর ধরে স্কোর করতে পারছেন না। বিরাট কোহলি এবং পূজারার মধ্যে বড় পার্থক্য বল ছন্দের। কোহলিও সে ভাবে রান করতে পারছেন না। তবে তাঁকে দেখে কখনও মনে হয়নি, তিনি ফর্মে নেই। অস্ট্রেলিয়া সফরের পর থেকে পূজারা কখনও-ই আত্মবিশ্বাসই দেখাতে পারেননি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে স্কোর করলেও, সেটা খুব বেশি ফলপ্রসূ হয়নি।’
সেই সূত্র যোগ করেছেন, ‘ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে ব্যর্থ হওয়ার পর ওঁর জন্য খুব কম সুযোগ ছিল। তবু নির্বাচকেরা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগে কোনও রকম পরিবর্তন করতে চাননি। ওভালে জোড়া ব্যর্থতা তাঁর ভাগ্যে সিলমোহর দেয়। এসএস দাস বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের জন্য লন্ডনে ছিলেন। তিনি অবশ্যই প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছেন এবং তাঁর প্যানেলের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলেছিলেন।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।