শ্রাদ্ধানুষ্ঠান উপলক্ষে খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল একটি বাড়িতে । আর সেই খাবার খেয়েই ঘটল বিপত্তি। একে একে অসুস্থ হয়ে পড়লেন শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে আসা ৫টি গ্রামের মানুষ। ঘটনাটি ঘটেছে সাঁইথিয়া ব্লকের ধোবাজল আদিবাসী পাড়ায়। সব মিলিয়ে ১১৮ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারমধ্যে ৫১ জন শিশু। তাদের সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, খাদ্যে বিষক্রিয়ার ফলে এমন ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কর্ণাটকের মন্দিরে প্রসাদ খেতেই বমি, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১৩৫ জন, মৃত ১
জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে আদিবাসী পাড়ায় ওই বাড়ির এক সদস্যের মৃত্যু হয়। সেই কারণে বাড়িতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেইমতো শনিবার ওই বাড়িতে এসেছিলেন কয়েকশো মানুষ। শনিবার সন্ধ্যায় ওই বাড়িতে আত্মীয়দের মুড়ি, বোঁদে, মিষ্টি দেওয়া হয়। তা খাওয়ার পরেই ঘটে বিপত্তি। একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিশু, মহিলা থেকে শুরু করে অন্যান্যরা। শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত ৫১ জন শিশু-সহ মোট ১১৮ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মাথাঘোরা থেকে শুরু করে বমি- পায়খানা শুরু হয়। সকালেই সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
জানা গিয়েছে, ধোবাজল ছাড়াও ভবানন্দপুর, মির্ধাপুর, পাগলডাঙ্গা, তালবোনা আদিবাসী পাড়ার আত্মীয়রা এদিন ওই বাড়িতে গিয়ে খাবার খেয়েছিলেন। তাদের সিউড়ি সদর হাসপাতালের ৫ ও ৬ তলায় আলাদা করে ভরতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে শিশু-মহিলা-পুরুষেরা ভরতি রয়েছেন।
এদিকে, খবর পেয়ে সেখানে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সহ চিকিৎসকদের নিয়ে গ্রামে পৌঁছন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, অসুস্থদের সিউরি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। এছাড়াও, নতুন করে যাতে কেউ অসুস্থ হয়ে না পড়েন তারজন্য একটি মেডিক্যাল টিম রাখা হয়েছে গ্রামে।পাশাপাশি খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে খাবার থেকেই বিষক্রিয়া হয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এবিষয়ে এক আত্মীয় জানান, রীতি মেনে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আগের রাতে আশেপাশের গ্রামের অনেকেই আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল। তাদের মুড়ি দেওয়া হয়েছিল তা খাবার পরেই সকলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বমি-পায়খানা হতে শুরু করে। আর এক আত্মীয় জানান, মুড়ির সঙ্গে বোঁদে ছিল। তা থেকেই খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়েছে বলে তার অনুমান। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। কেউ আশঙ্কাজনক নেই বলে জানিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ আধিকারিক।