রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের শুরুতেই বলেছিলেন, এই পরিষেবা সবার জন্য। থাকবে না কোনও মাপকাঠি। এবার সেই নিদর্শন দেখা গেল। আর চার বছর কাটাতে পারলেই বয়সে সেঞ্চুরি করবেন প্রৌঢ়া। তাই জীবনের সায়াহ্নে অসুস্থ হয়ে পড়লে যাতে পরিবারের উপর চাপ তৈরি না হয় তাই স্বাস্থসাথী কার্ড করতে চেয়েছেন তিনি। পূর্বস্থলীর নসরতপুরের ৯৬ বছরের সরস্বতী ঘোষ ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডের সুবিধা পেতে চেয়েছিলেন। মায়ের ইচ্ছাপূরণ করতে তাঁর ৭৩ বছরের মেয়ে লতিকা সরকার আবেদনও করে দেন। আর তারপরই ডাক পড়ল। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের পারুলডাঙ্গা নসরতপুর হাইস্কুলে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে দাঁড়িয়ে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড হাতে পেতেই সরস্বতী দেবী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেরা মুখ্যমন্ত্রী বলে সম্বোধনও করেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নসরতপুরের বাসিন্দা সরস্বতীদেবীর মেয়ে লতিকা সরকারের বাড়িতেই থাকেন। দু’জনেরই স্বামী প্রয়াত হয়েছেন। সরকারি ভাতায় কোনওরকমে দিনগুজরান করেন তাঁরা। কিন্তু শরীর অসুস্থ হয়ে পড়লেই কি করে চিকিৎসা করাবেন এই চিন্তায় ঘুম উড়েছিল। কারণ চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই। টিনের চালাঘরে থেকে চিকিৎসা করানোটা ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বন দেখার সামিল বলে মনে করেন সরস্বতীদেবী। অথচ একশো বছর বাঁচার ইচ্ছা আছে তাঁর।
‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড পেয়ে সরস্বতীদেবী বলেন, ‘শরীর খুব একটা ভাল নেই। যেকোনও মুহূর্তে শরীর খারাপ হতেই পারে। তাই সরকারের দেওয়া এই সুবিধা পেতে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড তৈরির সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করি। কার্ড পেয়ে আমি খুবই খুশি। এই পরিষেবা মেলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। আমার দেখা সেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতাই।’
বৃদ্ধার মেয়ে লতিকা সরকারও ‘স্বাস্থসাথী’ কার্ড পেয়ে বলেন, ‘দিন আনা দিন খাওয়া সংসার চলে গেলেও ভয় হয় যদি অসুস্থ হয়ে পড়ি, তাহলে কী হবে? তাই ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডটা করিয়ে নিলাম। দিদির দৌলতে তো মুশকিলের আসান হবে।’ স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পেয়ে এখন তাঁরা অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়েছেন। তাই বলেই ফেললেন, ‘আমার দেখা সেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতাই।’