আলিপুরদুয়ারের ফের জনরোষের বলি হল চিতাবাঘ। বুধবার জেলার ফালাকাটার জটেশ্বর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধুলাগাঁও গ্রামে একটি শ্মশানের কাছ থেকে চিতাবাঘের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা চিতাবাঘটিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। পশুটিকে মারার পর তার দাঁত উপড়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকী লোম ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এদিন পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: রাস্তা পেরতে গিয়ে দুর্ঘটনা, ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের
ওই গ্রামের শ্মশানের কাছে চিতাবাঘটির মৃতদেহ পড়েছিল। কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় চিতাবাঘটিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তারা বনবিভাগে খবর দেন। খবর পেয়ে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের কর্মীরা গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, চিতাবাঘটিকে গ্রামবাসীরা পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন। চিতাবাঘটির শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন জলদাপাড়া উদ্যানের এডিএফও নবজিৎ দে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি একটি চিতাবাঘ ওই এলাকায় বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীর উপর হামলা চালিয়েছিল। সব মিলিয়ে ঘটনায় ৩ জন গ্রামবাসী আহত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে নীরদ রায় এবং শ্যামল বর্মন নামে দুজনকে ভর্তি করা হয়েছিল বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। চিকিৎসার পর তাদের ছেড়ে দেয় হাসপাতাল। আরও একজনের চিকিৎসা করা হয় অন্য হাসপাতালে। এই ঘটনার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। তারজেরেই স্থানীয়রা চিতাবাঘটিকে পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, লাঠি, লোহার রড নিয়ে চিতাবাঘটির উপর হামলা চালানো হয়েছিল। এমনকী মেরে ফেলার পর নখ, দাঁত এবং লোম ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি ভাইরাল হয়েছে। চিতাবাঘটির মৃত্যুর ঘটনায় কারা জড়িত? তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, চিতাবাঘ পিটিয়ে খুন করার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও এই ধরনের বহু ঘটনা ঘটেছে। গত অক্টোবরে আলিপুরদুয়ারের একটি চিতাবাঘকে এভাবেই পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল দলগাঁও চা বাগান লাগোয়া এলাকায়। সেখানে প্রথমে চিতা বাঘের হামলায় মৃত্যু হয়েছিল এক বৃদ্ধার। এরপরে ঢেকলা চা বাগানে এক নাবালকের দেহ উদ্ধার হয়। এরপরে আরও একটি চা বাগানের কাছে ১২ বছর বয়সি এক কিশোরের দেহ উদ্ধার হয়। সেক্ষেত্রে চিতা বাঘের হামলাতেই তাদের মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন স্থানীয়রা। তারা চিতাবাঘ ধরার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু, তা সত্ত্বেও চিতা বাঘের হানায় মৃত্যু অব্যহত থাকাই পশুটিকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।