‘অসুস্থ’ অনুব্রত মণ্ডলকে বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ায় বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার সমালোচনার মুখে পড়লেন বোলপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি লেখেন, ‘নিজেদের ডিউটির সময়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে গিয়ে পরিষেবা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। অনুব্রতকে সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য।’
মঙ্গলবার বেলা ১১.৩০ মিনিট নাগাদ অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পৌঁছন সিবিআইয়ের এক আধিকারিক। অনুব্রতকে বুধবার বেলা ১১টার মধ্যে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে হবে জানিয়ে নোটিশ দেন তিনি। ওই আধিকারিক বেরিয়ে যাওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে ঢোকেন বোলপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। তিনি অনুব্রতর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানালেও বেড রেস্টের পরামর্শ দেন। ওই চিকিৎক জানান অনুব্রতর অর্শ পেকে গিয়েছে।
জেলে পড়শি পার্থদাকে দেখে এগিয়ে গেলেন ছত্রধর, কী করলেন প্রাক্তন মহাসচিব !
এর পরই এক ফেসবুক পোস্টে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা লেখেন, ‘এতদিন জানতাম সরকারি চিকিৎসা পেতে গেলে রোগীকে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। কিন্তু SSKM প্রত্যাখ্যাত সম্পূর্ণভাবে সুস্থ বীরভূমের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ক্ষেত্রে ঘটেছে ঠিক উলটোটা। বোলপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ডাক্তাররা ডিউটি আওয়ার্সে হাসপাতাল ছেড়ে প্রভাবশালী নেতার বাড়িতে এসে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য। তাহলে কি ভবিষ্যতে আশা রাখতে পারি যে এই ডাক্তাররা আর পাঁচটা অসুস্থ মানুষের পরিষেবার জন্য বাড়ি বাড়ি এসে চিকিৎসা করে যাবেন?’
সন্ধে গড়ালেও বোলপুরেই অনুব্রত, কাল কি ফের হাজিরা এড়াবেন কেষ্ট?
বলে রাখি, সোমবার SSKM হাসপাতালে যে ভাবে অনুব্রত মণ্ডলের চিকিৎসা করা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সোমবার হাসপাতালে পৌঁছে সোজা উডবার্ন ওয়ার্ডে চলে যান অনুব্রত। সেখানে আগে থেকেই তাঁর জন্য বুক করা ছিল ২১৬ নম্বর কেবিন। সেখানে তাঁকে পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। এর পর তাঁরা জানিয়ে দেন, অনুব্রতকে ভর্তি করার দরকার নেই। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, যে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে সাধারণ মানুষকে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয়। বহু রোগীকে সুস্থতার জন্য হাসপাতালের মেঝেয় দিন কাটাতে হয়, সেখানে অনুব্রত মণ্ডলের জন্য কেন আগে থেকে আটকে রাখা হল কেবিন? অনুব্রত মণ্ডল কোনও জনপ্রতিনিধি নন। ফলে সাংবিধানিকভাবেও তাঁর আলাদা কোনও গুরুত্ব নেই। শুধুমাত্র শাসকদলের নেতা বলেই কি আইনকানুন খোলামকুচি?
ওদিকে বোলপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু জানিয়েছেন, ওপরমহলের চাপে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে চিকিৎসক পাঠাতে হয়েছে।