সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হলেন পুলিশ অফিসার। রাতে ডিউটি সেরে বাড়ি ফিরেছিলেন। তারপই গুলির শব্দে কেঁপে উঠে পাড়া। স্থানীয়রা গুলির আওয়াজ লক্ষ্য করে ছুটে গিয়ে দেখেন। রক্তে ভেসে যাচ্ছে সারা ঘর। মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েছেন পুলিশ অফিসার। পাশে পড়ে রয়েছে তাঁর সার্ভিস রিভলভার। ঘটনার সময় ডিউটি সেরে বাড়ি ফিরেই আত্মঘাতী হন তিনি। তবে কি কারণে আত্মঘাতী হলেন তিনি, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
শনিবার রাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির সেবকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সেবক ফাঁড়ির পুলিশ। তারপর ওই পুলিশ অফিসারকে রক্তাক্ত অবস্থায় ভাড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রবিবার দুপুরে পুলিশ অফিসারের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত ওই পুলিশ অফিসারের নাম সুদীপ ছেত্রী (৪৫)। তিনি দার্জিলিং জেলা পুলিশের অন্তর্গত সেবক ফাঁড়িতেই গত দেড় বছর ধরে অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত ছিলেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এদিন সুদীপবাবু নিজের সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে কি কারণে তিনি আত্মঘাতী হলেন, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সেবক ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন সুদীপবাবু। তিনি যে কোনও সমস্যায় ছিলেন, তা তাঁকে দেখে কোনও সময় বোঝা যায়নি। ওসির কথায়, এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সুদীপবাবুর পৈতৃক বাড়ি মালদহে। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ও সন্তান শিলিগুড়িতে থাকেন। সেবকে কর্মরত হওয়ার কারণে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখানে একাই থাকতেন তিনি। এদিন ওই ভাড়া বাড়ি থেকেই তাঁর গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঘটনার রাতে সাড়ে দশটা থেকে এগারোটা নাগাদ আচমকাই গুলি চলার আওয়াজ শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই তড়িঘড়ি তাঁরা ওই পুলিশ অফিসারের বাড়িতে ছুটে আসেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা ওই অফিসারকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তারপর থানায় খবর দেওয়া হয়। এর পর ঘটনাস্থলে পুলিশ কর্মীরা এসে রক্তাক্ত অফিসারের দেহ উদ্ধার করে শিলিগুড়ি সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তিনি ঠিক কি সমস্যায় ভুগছিলেন, তা জানার জন্য তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন তদন্তকারীরা। কাজের কোনও চাপ ছিল নাকি ব্যক্তিগত কোনও সমস্যার কারণে তিনি আত্মঘাতী হলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।