বিজেপির ‘আর নয় অন্যায়’ মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার বাঁধল আসানসোলের বারাবনিতে। চলল বোমা, গুলি। পুড়িয়ে দেওয়া হল বাইক। আহত হয়েছেন কয়েকজন। তা নিয়ে বাকযুদ্ধে জড়ালেন বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
শনিবার সকালে বারাবনিতে বিজেপির ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মূসচি ছিল। সেজন্য বারাবনির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জামগ্রামে জমায়েত হয়েছিলেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের অভিযোগ, মিছিল শুরুর কিছুক্ষণ পরেই হামলা চালায় তৃণমূলের লোকজন। চালানো হয় গুলি ও বোমা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাইকে। কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর চালানো হয়। সেই সময় সেখানে ছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপি জেলা সভাপতি লক্ষ্ণণ ঘোড়ুই। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের গুন্ডারা গুলি চালিয়েছে। বোমা ছুড়েছে। আহত হয়েছেন পাঁচ-সাতজন।’ পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
পরে বাবুল বলেন, ‘বারাবনিতে বিজেপির পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচিতে তৃণমূলের গুন্ডাদের বোমাবাজি ও গুলি চালানোর তীব্র নিন্দা করছি।#টিএমছি দলটাই এখন গুন্ডাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, বারবার সেটা স্পষ্ট হচ্ছে, ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না জেনেই গুন্ডাদের দ্বারা আক্রমণ।’
যদিও বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক দাবি করেন, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মিছিল করেছে বিজেপি। কিন্তু কোথাও ঝামেলা হয়নি। কোনও ইস্যু না পেয়ে বিজেপি নিজেদের মধ্যেই গন্ডগোল পাকিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির মিছিলে সমাজ-বিরোধীরা ছিল। তারাই বোমা ছুড়েছে, গুলি চালিয়েছে। তাতে তৃণমূলের কেউ জড়িত নেই। পরে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক মলয় ঘটক দাবি করেন, পশ্চিম বর্ধমানে বিজেপির চারটি গোষ্ঠী আছে। সেই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে গোলমাল হয়েছে।
জিতেন্দ্রের পালটা দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন বাবুল। পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল সভাপতিকে ‘অপরিণত ও নির্বোধ রাজনীতিবিদ’ হিসেবে কটাক্ষ করে বাবুল জানান, তৃণমূলের অভিযোগ মানুষ বিশ্বাস করবেন না। বারাবনিতে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অসিত মণ্ডল ‘সবথেকে বড় কয়লা মাফিয়া’। বালি চোরাকারবারও চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন বাবুল। তাঁর আরও দাবি, পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন ‘সমাজবিরোধী’ জিতেন্দ্র। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারির ভয়ে কয়লা মাফিয়া এবং বালি মাফিয়ার পান্ডাও জিতেন্দ্র ভুলভাল বকছেন বলে অভিযোগ করেন বাবুল। পালটা জিতেন্দ্র কটাক্ষ করেছে, বাবুলের সংস্পর্শে এলেই লোকজন ‘অসামাজিক’ হয়ে যায়। বাবুলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জিতেন্দ্র।