শুরুর আক্ষেপ পশ্চিমবাসীকে একেবারে শেষবেলায় সুদে-আসলে মিটিয়ে দিচ্ছে শীত। উত্তুরে হাওয়ার দাপটে ভরা মাঘেও কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে উত্তর থেকে দক্ষিণ। মঙ্গলবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঠেকেছে ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় পারদ ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি আছে। কয়েকটি জেলায় আবার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নীচে নেমে গিয়েছে। সবমিলিয়ে ১৬ টি জেলায় শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সোমবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৪ ডিগ্রি। স্বাভাবিকের ৪.৫ ডিগ্রি কম। যা গত ১০ বছরের ফেব্রুয়ারির নিরিখে রেকর্ড। কলকাতার উপকণ্ঠ দমদমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৬ ডিগ্রি (স্বাভাবিকের থেকে ৫.৩ ডিগ্রি কম), ডায়মন্ড হারবারে ১০.৯ ডিগ্রি (স্বাভাবিকের থেকে ৪.৯ ডিগ্রি কম) ছিল। বাঁকুড়া, শ্রীনিকেতন, কল্যাণীর মতো জায়গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ থেকে সাত ডিগ্রি কম ছিল।
সেই রেশ ধরে মঙ্গলবারও হাড়কাঁপানো ঠান্ডা আছে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায় শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস না থাকলেও উত্তুরে হাওয়ার যে দরজা খুলে গিয়েছে, তাতে কলকাতা, হাওড়া এবং হুগলিতেও কনকনে ঠান্ডা থাকবে। সাধারণত প্রজাতন্ত্র দিবসের পর থেকে পারদের উত্থান হয়। ফেব্রুয়ারিতে তাপমাত্রা সাধারণত ১২ ডিগ্রির ঘরে ঘোরাফেরা করে। কিন্তু এবার ফেব্রুয়ারির প্রথম দু'দিনই পারদ ১১ ডিগ্রির ঘরে আছে। সবমিলিয়ে আরও দু'তিনদিন এরকম জাঁকিয়ে শীত মালুম হবে। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার পর্যন্ত শীতের এরকম কামড় থাকবে।
উত্তরবঙ্গের ছবিটাও এক। মাঘের শীতের ছোবলে রীতিমতো কাঁপছে উত্তরবঙ্গের মানুষ। দুই দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার এবং মালদহে শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশার আচ্ছাদনে আছে মালদহ, কোচবিহার, দুই দিনাজপুর। তারইমধ্যে পশ্চিমী ঝঞ্জার ফলে আগামী কয়েকদিনে উত্তর-পশ্চিম ভারতে তুষারপাত হতে পারে। সেই পশ্চিমী ঝঞ্জার সঙ্গে পূবালি হাওয়ার সংঘাতের ফলে সপ্তাহান্তে সিকিম, দার্জিলিং-সহ পাহাড়ে বৃষ্টি হতে পারে। ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকলে আগামী রবিবার এবং সোমবার তুষারপাতও হতে পারে।