প্রধানমন্ত্রী–মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছিল বানভাসী পরিস্থিতি নিয়ে। তারপরই সাহায্য এসেছিল নয়াদিল্লি থেকে। এই পদক্ষেপ মেনে নিতে পারেননি রাজ্য বিজেপির কেষ্টবিষ্টুরা। তড়িঘড়ি চিঠি লেখেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি সঠিক নয় বলে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অভিযোগ জানান তিন পাতার চিঠিতে। এবার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে শাসক–বিরোধী চাপানউতোর আরও বাড়ল। মুখ্যমন্ত্রী বন্যার জন্য ডিভিসি’র জল ছাড়াকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবার অভিযোগ করেন, রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য’ দিচ্ছেন। সেচের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি দিতে না পারায় টাকা ফেরত চলে গিয়েছে।
ঠিক কী বলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি? দিলীপবাবু নয়াদিল্লিতে বলেন, ‘জমি দিতে পারেনি রাজ্য সরকার। তাই তিস্তা প্রকল্পের ১৭০০ কোটি টাকা, আয়লার ৫ হাজার কোটি টাকা ফিরে গিয়েছে। আবার তারকেশ্বর–গন্ধেশ্বরী প্রকল্পে কেন্দ্র ১২০০ কোটি টাকা দিলেও কাজ হয়নি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান জমির অভাবে আটকে আছে। আর দোষ চাপানো হচ্ছে কেন্দ্রের ঘাড়ে!’
কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা নিয়ে বরাবরই সরব তৃণমূল কংগ্রেস। একাধিক চিঠি লেখা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে। অথচ দিলীপবাবুর প্রশ্ন, ‘দামোদর বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০১৭ সালে দু’টি আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্ক থেকে দু’হাজার কোটি টাকার আর্থিক সাহায্য পেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। সেই টাকা কোথায়? ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইবিআরডি) ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক (এআইআইবি) ২১৪৬ কোটি টাকা সাহায্য দেয় রাজ্যকে। তার পরেও সর্বত্র বন্যা হচ্ছে। সব টাকা কি লুঠ হয়ে গিয়েছে?’
এই বিষয়ে আগেই শুভেন্দু অধিকারী খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘বন্যা, জল–দুর্ভোগ এবং দুয়ারে নর্দমার জল প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী!’ আর দিলীপ ঘোষের থোঁচা, ‘উত্তরবঙ্গে বন্যা হলে মোদীর দোষ! কলকাতায় বন্যা হলে মোদীর দোষ! তা হলে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ বছর ধরে কী করেছেন?’ যদিও এই বন্যার জন্য ডিভিসি’র জল ছাড়ার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু মেনে নিতে পারেননি রাজ্য বিজেপির নেতারা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।