মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়ে দৌড় লাগালেন সরকারি কর্মীরা। ততক্ষণে জেলাশাসক থেকে বিডিও’র কপালে ভাঁজ পড়েছে। কারণ তিনি নিজে এই পোশাক সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেবেন বলে নিয়ে এসেছিলেন। সেখানে সঠিক সময়ে তা না পৌঁছনোয় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি অনুষ্ঠান থামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। মঞ্চ থেকে বলেন, ‘এখানে আমিও বসে রইলাম। আপনারাও বসে থাকুন।’ এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিডিও অফিসে রাখা শীতবস্ত্র দৌড়ে নিয়ে আসা হয়। অবশেষে ঘোষণা মতো উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে পোশাক বিতরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? হিঙ্গলগঞ্জে পুজো দিয়ে বেরিয়ে কিছু কথা বলেন মানুষের স্বার্থে। এখানে তিনি মানুষজনকে শীতের পোশাক দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা এসে পৌঁছয়নি। তাই সেখানে জেলাশাসককে তিনি বলেন, ‘বনদেবী মন্দির পাকা করতে ডিএমকে বলে যাচ্ছি। এই মন্দিরে আসার জন্য বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে। আর গরম পোশাক কোথায় গেল? জিনিস দিলে আর তা না পেলে খুব খারাপ লাগে। মনে রাখবেন সরকার ভুল করলে দায় নিতে হবে আমাকে। পুলিশ অন্যায় করলে আমার ঘারে দোষ পড়ে। যদি বিডিও, আইসি, ডিএমরা ঠিকমতো কাজ না করেন তাহলে আমি অ্যাকশন নেব।’ এখানের সভা রেগে গিয়ে বাতিল করেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল? শীতের পোশাক মুখ্যমন্ত্রী চাইতেই মঞ্চে উপস্থিত সরকারি অফিসাররা একে অপরের মুখের দিকে তাকাতে থাকেন। তার মধ্যে একজন বলেন, ‘বিডিও অফিসে রয়ে গিয়েছে।’ এটা শুনেই রেগে যান মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাক, বিডিও’দের তীব্র ভর্ৎসনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, কত কষ্ট করে এখানে আসব বলে তিনদিন ধরে কম্বল, চাদর এবং সোয়েটার কিনেছি। আর এসে দেখছি নেই! বলুন বিডিও’কে নিয়ে আসতে আমি বসব। জিনিস পাঠালে সেটা না পৌঁছলে আমার গা জ্বালা করে।’
আর কী ঘটেছে সেখানে? এখানের মঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, কেন বিডিও অফিসে ওই সব পোশাক পড়ে রইল? তার পরেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি আর মিটিং করব কী! আমি তো ওটাই দিতে এসেছিলাম। শীতকাল, যদি আপনারা ঠিক মতো কাজই না করেন তাহলে আমি অ্যাকশন নেব। পোশাক না আসা পর্যন্ত এখানেই বসে থাকবেন।’ এভাবেই উপস্থিত জনতাকেও অপেক্ষা করতে অনুরোধ করেন। মানুষও ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে শীতবস্ত্র নিয়ে ফেরেন। আর বাকি পোশাক বিডিও অফিস থেকে সবার কাছে পৌঁছে যাবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। শেষে এই বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই খবর রাখবেন।’