পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে মনোনয়ন পর্বে কোচবিহার তপ্ত হয়ে উঠেছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ও এখানে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল বলে বিরোধীদের অভিযোগ। এবার কোচবিহারের মাথাভাঙায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী খুনের ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর খুনের ঘটনায় বিরোধীদের যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলছে শাসকদল। নিহত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় ঘোকসাডাঙা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যদিও জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, খুনের রাজনীতিতে বিজেপি বিশ্বাস করে না। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই দলীয় কর্মীর খুন হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম দুলাল বিশ্বাস (৩০)। কোচবিহারের মাথাভাঙা–২ নম্বর ব্লকের পুঁটিমারি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। মাথাভাঙার লতাপাতা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন দুলাল। রবিবার রাতে গ্রামের এক মাঠে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের পিকনিক ছিল। সেখানেই গিয়েছিলেন এই দুলাল। কিন্তু পিকনিক থেকে আর তিনি বাড়ি ফেরেননি। বাড়ির সদস্যরা খোঁজাখুঁজি করলেও প্রথমে পাননি। পরে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটা জমির পাশ থেকে দুলালের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাথাভাঙা মর্গে পাঠায়।
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে এদিন পিকনিক হয়। সেখানে স্থানীয় দলীয় কর্মীদেরও ডাকা হয়েছিল। দুলাল সেখান থেকে ফেরার পথেই তাঁর উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়। পথের ধারেই তাঁর দেহ পড়ে ছিল। সেটা দেখতে পেয়ে পথচারীরা থানায় খবর দেন। তখন পুলিশ এসে দেহটি তুলে নিয়ে ময়নাতদন্তে পাঠায়। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনায় রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছে। তবে এই খুনের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে কিনা সেটা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ার, বালুরঘাটের ঘটনায় আলোড়ন
আর কী জানা যাচ্ছে? সূত্রের খবর, ইদানিং এলাকারই এক যুবকের সঙ্গে মেলামেশা বেড়ে উঠেছিল। তারপর কোনও কারণে তাঁদের মধ্যে বচসা হয়। এই খুনের পিছনে সেই কারণও থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর পরিবারের অভিযোগ, তৃণমূল করে বলেই তাঁদের ছেলেকে খুন করেছে বিজেপি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। তাঁদের দাবি, বিজেপি খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে বারবার উত্তপ্ত হয়েছিল কোচবিহার। একাধিক রাজনৈতিক নেতা–কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। এবার সেই ধারা অব্যাহত রইল।