নিজের যৌন কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার শুনানি চলছে নিউইয়র্কের আদালতে। সেই শুনানি চলাকালীনই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দশম বারের জন্য জরিমানা করলেন বিচারপতি। আদালত অবমাননার দায়ে ট্রাম্পকে এই ১০ বার জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার এই মামলায় ট্রাম্পকে ১০০০ ডলার জরিমানা করা হয়। এর আগেও ৯ বারে ৯০০০ ডলারের জরিমানা করা হয়েছিল ট্রাম্পকে। তবে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, আগের জরিমানাগুলির পরও ট্রাম্প নিজের ভুল শুধরে নেননি। উল্লেখ্য, ট্রাম্প বারবার জনসমক্ষে সাক্ষী এবং জুরি সদস্যদের নিয়ে কথা বলছেন। যা সেদেশে আদালত অবমাননার সমান। এই আবহে ফের একবার জরিমানার মুখোমুখি হলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিচারপতি বলেন, 'যাতে অভিযুক্তকে জেলে না পাঠাতে না হয়, তার জন্য যা যা করার সবই করেছি। তবে প্রয়োজনে অভিযুক্ত আমে জেলেই পাঠাব।' (আরও পড়ুন: আজকের ৯৩ আসনে ২০১৯ সালে ৫১.৮% ভোট পেয়েছিল NDA! কতটা পিছিয়ে INDIA?)
আরও পড়ুন: আজকের ভোটে ধনীতম প্রার্থী ১৩৬১ কোটির মালকিন! তৃতীয় স্থানে শিবাজির বংশধর
উল্লেখ্য, এই বিচারের দায়িত্বে থাকা বিচারক হুয়ান মেরচানকে মামলা থেকে সরাতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে আজকে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিচারক মেরচান জানিয়ে দেন, তিনি এই মামলা থেকে সরছেন না। এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, মেরচানের মেয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হয়ে রাজনৈতিক পরামর্শদাতা। এই আবহে বিচারকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার সবার্থে বিচারক বদলের আর্জি জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তাঁর সেই দাবি ধোপে টেকেনি।
আরও পড়ুন: আচরবিধি শিথিল হতেই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের লাভের খাতায় জুড়বে ২৭.৫ শতাংশ?
প্রসঙ্গত, প্রথম মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোনও ফৌজদারি মামলার বিচারে হাজির হয়ে লজ্জার ইতিহাস গড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের যৌন কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত ট্রাম্প। এদিকে আর কয়েক মাসের মধ্যেই আমেরিকায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ট্রাম্প রিপাবলিকান প্রার্থী হয়ে বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়বেন সেই নির্বাচনে। তার আগে অবশ্য এই মামলার বিচার অস্বস্তিতে ফেলবে ট্রাম্পকে।
আরও পড়ুন: মাঝে আর মাত্র ১ দিন, বৃহস্পতি থেকেই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্য আসছে বড় বদল
জানা যাচ্ছে, এই মামলায় মোট চারটি অভিযোগ রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে ৫ নভেম্বরের ভোটগ্রহণের আগে একটি মাত্র অভিযোগের বিচার সম্পন্ন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে এই মামলায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলেও প্রেসিডেন্ট হতে পারেন। তবে রয়টার্সের এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্পের নির্বাচন জেতার সম্ভাবনা অনেকটা বড় ধাক্কা খেতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলার ৪ আসনে ভোট আজ, ২০১৯-এ কে কোথায় জিতেছিল, ২০২১-এর নিরিখে এগিয়ে আছে কে?
প্রাথমিক ভাবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্ক দণ্ডবিধির ১৭৫ ধারা অনুযায়ী ব্যবসায়িক রেকর্ড জালিয়াতির একাধিক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এই মামলা। এদিকে জালিয়াতির অভিযোগে ট্রাম্প যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তবে প্রতিটি অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ চার বছর করে কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি। তবে এই অভিযোগগুলির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক কারাদণ্ডের বিধান নেই। এই আবহে দোষী সাব্যস্ত হলেও, ট্রাম্পকে জেলে যেতে নাও হতে পারে।
আরও পড়ুন: তৃতীয় দফার ভোটে বাংলায় কোটিপতি প্রার্থী ১৩ জন, ধনীতম নেতার সম্পত্তি কত জানেন?
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারের সময় পর্নস্টার স্টর্মির মুখ বন্ধ করতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল এই মামলা। স্টর্মির দাবি, ২০০৬ সালে নেভেদায় সেলেব্রিটিদের একটি গলফ প্রতিযোগিতায় ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। এরপর ২০০৭ সালে একটি শো'তে অংশগ্রহণ করে লস অ্যাঞ্জেলসে বেভারলি হিলসে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বাংলোয় দেখা করেছিলেন স্টর্মি। এরপর ২০১১ সালে ইন টাচ ম্যাগাজিনে স্টর্মি দাবি করেন যে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। সেই সংক্রান্ত একাধিক তথ্যও দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন। এই বিতর্কের পর ২০১৬ সালে রিপাবলিকানদের হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ান ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের অক্টোবরে ট্রাম্পের সঙ্গে 'সম্পর্কের' বিষয় নিয়ে মুখ না খোলার জন্য স্টর্মিকে ১৩০,০০০ মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের আইনজীবী। এরপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে ট্রাম্পের আইনজীবী দাবি করেছিলেন যে স্টর্মিকে নিজের থেকে অর্থ দিয়েছিলেন। ট্রাম্প ওই বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেননি।