সন্দেশখালির স্টিং অপারেশন কি ফেক বা জিপফেক? নাকি গোটাটাই সত্যি? এই প্রশ্ন এখনও রাজ্য–রাজনীতিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ সন্দেশখালির নির্যাতিতা যাঁদের বলা হচ্ছে তাঁরা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুর ঘুরে এবার তাঁরা এসেছেন জঙ্গলমহলে। বিজেপির হয়ে তাঁরা প্রচার করছেন রাজ্যের অন্যান্য জেলায়ও। এই সন্দেশখালির নির্যাতিতারা সন্দেশখালির স্টিং অপারেশন এবং ভিডিয়ো–কে ‘তৃণমূল কংগ্রেসের সাজানো’ বলে দাবি করলেন। তাঁরা বললেন, ‘পুরোটাই জালিয়াতি।’ কিন্তু তাহলে বিজেপি বা নির্যাতিতারা আদালতে মামলা করছেন না কেন? এই প্রশ্নের কেউ উত্তর দিচ্ছেন না। সুতরাং তাঁরা মিথ্যে বা ভুয়ো বলে দাবি করলেও একেবারে ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না।
আজ, মঙ্গলবার আদালতে যাওয়ার পথে শেখ শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ফেক নয়। ওটাই অরিজিনাল।’ এই ভিডিয়ো চারদিকে ছড়িয়ে পড়তেই সন্দেশখালির মানুষজন এখন তেতে উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। স্বয়ং বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র চাপে পড়ে গিয়েছেন। আর জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রাম নিয়ে শুভেন্দু স্পষ্ট বলেছিলেন, ‘এই আসন আমার চাই।’ এবার সেই জঙ্গলমহলে প্রচারে এসেছেন সন্দেশখালির নির্যাতিতারা। বিজেপির প্রচারে পাঁচজন মহিলা ঝাড়গ্রামে এসেছেন। তাঁরা তাঁদের অত্যাচারের কাহিনী শোনাচ্ছেন। কিন্তু সন্দেশখালিতে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালকে ওই ভিডিয়োয় বলতে শোনা গিয়েছে, সবটাই সাজানো ঘটনা এবং পরিকল্পনা করে টাকা দিয়ে করানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ এবং শিলান্যাস অনুষ্ঠান থমকে, তাহলে কবে হবে?
এই নির্যাতিতারা যেমন গ্রামে ঘুরে সন্দেশখালি নিয়ে বলছেন তেমন তৃণমূল কংগ্রেস স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো নিয়ে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নেমে পড়েছেন। যা চোখে দেখা যাচ্ছে সেটাই মানুষজন বিশ্বাস করবেন। হচ্ছেও তাই। ওই ভিডিয়ো এখন সর্বত্র দেখানো হচ্ছে। সেটা দেখে মানুষ মনে করছেন, সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপি ষড়যন্ত্র করেছিল। তাতে নির্বাচনী প্রচারে ব্যাকফুটে গিয়েছে বিজেপি। সবারই এখন প্রশ্ন, যদি এটা মিথ্যে হয় তাহলে বিজেপি মামলা করছে না কেন? পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বিজেপি সন্দেশখালির মেয়েদের এনে গোপীবল্লভপুর, বিনপুরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করছে।
এখন নয়াগ্রাম ব্লকে এসে গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছেন সন্দেশখালির পাঁচজন মহিলা। তাঁরা নির্যাতিতা বলে নিজেদের দাবি করেছেন। এই মহিলারা বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের উপর অত্যাচার করেছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেলেও অত্যাচারও হচ্ছে। আমাদের ইজ্জত ও সম্মান বেঁচে থাকুক সেটাই চাই। দিদিমণি সব জায়গায় যাচ্ছেন, আমাদের সামনে আসছেন না কেন? আমরা এই সরকার বদলাতে চাই।’ কিন্তু এই স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো’র বিরুদ্ধে মামলা করছেন না কেন? তার জবাব মেলেনি। বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী পুষ্প চেট্যালের কথায়, ‘বিনপুর বিধানসভার জামবনি ব্লকের একটি বুথেই ১৪০ জন গ্রামের মহিলা জড়ো হন। এই নির্যাতিতারা তাঁদের উপর হওয়া অত্যাচারের কথা নানা জায়গায় গিয়ে মহিলাদের শোনাচ্ছেন। তবে ঝাড়গ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা পাল্টা বলেন, ‘সবাই জেনে গিয়েছে সন্দেশখালির ঘটনাটি সাজানো। প্রমাণিত হয়েছে বিজেপি নোংরা রাজনীতি। জঙ্গলমহলে নোংরা রাজনীতি চলবে না।’