রাজ্য সরকার পরিচালিত পরীক্ষাগার থেকে ত্রুটিপূর্ণ করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট তুলে নিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিটউট অফ কলেরা অ্য়ান্ড এন্টেরিক ডিজিজ (নাইসেড)। মঙ্গলবার একথা জানিয়েছেন সংস্থার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
আরও পড়ুন : COVID-19 Updates: তিন হাজার কর্মী বিশিষ্ট লোকসভায় প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ
তিনি জানান, ত্রুটিপূর্ণ কিটের পরিবর্তে পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ভাইরোলজি (এনআইভি) যে কিট পাঠিয়েছে, সেগুলি রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : Lockdown 2.0: প্রায় ২০ দিন নয়া করোনা আক্রান্ত নেই, জলপাইগুড়ি-কালিম্পঙে কেন্দ্রীয় দল কেন, ক্ষোভ মমতার
অবশ্য করোনা পরীক্ষা নিয়ে নাইসেড ও রাজ্যের মধ্যে আগে থেকেই টানাপোড়েন চলছিল। দেখে নিন পুরো ঘটনার টাইমলাইন :
১) গত ১৩ এপ্রিল নাইসেডের অধিকর্তা শান্তা দত্ত জানান, রাজ্যের জনসংখ্যার তুলনায় নগণ্য নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। অথচ টেস্ট কিটের অভাব নেই। তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
২) এরপর ১৯ এপ্রিল স্বাস্থ্য দফতর অভিযোগ করে, সপ্তাহ দুয়েক আগে রাজ্যে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) নোডাল এজেন্সি নাইসেডের তরফে যে করোনা পরীক্ষার কিট দেওয়া হয়েছে, তা ত্রুটিপূর্ণ। ফলে পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল মিলছে না। আবারও পরীক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে করোনা নির্ণয়ে বিলম্ব হচ্ছে।
আরও পড়ুন : বাংলার ৭৮ জনের র্যাপিড টেস্ট, করোনা পজিটিভ কলকাতার ২ বাসিন্দা
৩) যদিও একটি মহলের তরফে অভিযোগ করা হয়, কম সংখ্যক টেস্ট করার ব্যর্থতা ঢাকতে রাজ্য সাফাই গাইছে।
৪) নাইসেডের তরফে অবশ্য স্বীকার করা হয়, কিটে সমস্যা ছিল। স্ট্যান্ডার্ডাইজ না করায় এরকম ত্রুটি হতে পারে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়।
৫) নাইসেড অধিকর্তা বলেন, 'বিষয়টি নোট করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চও (আইসিএমআর)। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, একদম ঠিক ফলাফল দেওয়ার জন্য কিটগুলিকে স্ট্যান্ডার্ডাইজ করেনি উৎপাদনকারী সংস্থা। প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের পক্ষে কিটের স্ট্যান্ডার্ডাইজ করা কঠিন। তাই সেগুলিতে ভিন্ন ও মীমাংসাহীন ফল দেখাচ্ছে। বিষয়টি দেখছে আইসিএমআর।'
আরও পড়ুন : Covid-19: করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য পশ্চিমবঙ্গকে ৩৪৬১ কোটি দিল কেন্দ্র
৬) ইতিমধ্যে সোমবার আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়, যে কিট দেওয়া হয়েছে। তার মান ভালো। তবে তাপমাত্রার জন্য সমস্যা হতে পারে। আইসিএমআরের মহামারীবিদ্যা ও সংক্রামক রোগের প্রধান রমন আর গঙ্গাখেদকর বলেন, 'এখানে (যে কিটে রাজ্যে পরীক্ষা হচ্ছিল) শুধু একটাই সমস্যা আছে। এই কিট যখন রাখতে হবে, তখন ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে রাখতে হবে। ২০ ডিগ্রির উপর গেলে টেস্টের ফলাফল ঠিকঠাক আসবে না। কয়েকজনের (নমুনা) পুনরায় পরীক্ষা করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে। কারণ কন্ট্রোলে যেগুলি থাকে সেগুলি লাইট আপ হয়নি। যখন টেকনিশিয়ান কাজ করেন ও বেশি নমুনা না থাকে, তাহলে ওটার স্ট্রিপ বাইরে বের করে আরও একবার রান করান, দ্বিতীয় নমুনা পরীক্ষা করার জন্য। সেরকম যখন করবেন, তখন ঘরের তাপমাত্রায় রেখে পরীক্ষার চেষ্টা করেছিলেন কিনা, সেটা দেখতে হবে।'
পাশাপাশি, তিনি আরও জানান, করোনার সংকটময় পরিস্থিতিতে পুণের এনআইভি-র কিট রাজ্যের হাতে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন : এক দিনে ৫৩, কেন্দ্রের খাতায় পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্ত ৪০০ ছুঁইছুঁই
৭) এরপর মঙ্গলবার নাইসেডের ওই আধিকারিক জানান, ত্রুটিপূর্ণ করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট তুলে নেওয়া হচ্ছে। পরিবর্তে এনআইভি-র কিট দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ছাড়পত্র পেয়েছিল কিট। তবে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে রাখা হলে ত্রুটিপূর্ণ ফল পাওয়া হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।