বয়স মাত্র সাত বছর। কিন্তু শাস্তি পেতে হল মর্মান্তিক। আর তাতে শিউরে উঠল গোটা শিক্ষামহল। প্রথমে মারধর দিয়ে শুরু হলেও চরমে পৌঁছয় গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে। আর তা সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করে উঠল বছর সাতের পড়ুয়া। অভিযোগ, এই শাস্তিই দিয়েছেন তার গৃহশিক্ষিকা। আর শিশুটির অপরাধ ছিল সে এক থেকে একশো পর্যন্ত লিখতে পারেনি। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, শাস্তির বিষয়ে মুখবন্ধ রাখার জন্য শিশুকে ভয়ও দেখান ওই গৃহশিক্ষিকা। অবশেষে থানায় অভিযোগ দায়ের হতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছে শিশু পড়ুয়ার সঙ্গে? পরিবার সদস্যরা জানাচ্ছেন, হুগলির কোন্নগরের বাসিন্দা রুমু ঘোষের বাড়িতে প্রাইভেট টিউশন পড়তে গিয়েছিল বেসরকারি স্কুলের প্রথম শ্রেণির পড়ুয়া। তাকে এক থেকে একশো পর্যন্ত লিখতে বলেন রুমু। অভিযোগ, তা কিছুতেই লিখতে না পারায় শিশুটিকে মারধর করেন তিনি। প্রথমে স্কেল দিয়ে পরে শিশুটির পায়ে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে দেন। তার জেরে শিশুটির পায়ে ক্ষত তৈরি হয়। ওই ক্ষতে মলম লাগিয়ে কাপড় বেঁধে দেন গৃহশিক্ষিকা রুমু।
রাতে বা়ড়ি ফিরে ভয়ে কিছুই বলেনি পড়ুয়া। কিন্তু পায়ে বাঁধা কাপড়ের টুকরো দেখেই সন্দেহ হয় পরিবারের সদস্যদের। আর তা খুলতেই ক্ষত দেখতে পান শিশুটির মা। তখন কাঁদতে কাঁদতে সব বলে ফেলে শিশু পড়ু্য়া। শিশুটির কথা শুনে কোন্নগর পুলিশ ফাঁড়িতে গৃহশিক্ষিকা রুমুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন তাঁরা। যদিও গৃহশিক্ষিকার দাবি, ‘ভয় দেখাতে গিয়েই এমনটা ঘটেছে।’
এই অভিযোগের পাশাপাশি থানায় গিয়ে সোচ্চার হন হিন্দমোটরের বাসিন্দারা। শিশু–পড়ুয়ার উপর এমন নির্মম অত্যাচার নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শিউরে উঠেছেন এলাকাবাসীও। শনিবার অভিযুক্ত গৃহশিক্ষিকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রবিবার তাঁর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন শ্রীরামপুর আদালতের বিচারক। শিশুটি তাঁর মাকে বলে, ‘আর পড়তে যাব না মা’।