মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে চপশিল্পের কথা নতুন নয়। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু এই চপশিল্পকে নিয়েই নিজের গবেষণাপত্র তৈরি করে ফেলেছেন মালদহে গাজোলের মেয়ে কণা সরকার। চপশিল্প যে গ্রামীণ অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলে সেটাই প্রতিফলিত হয়েছে কণার ওই গবেষণাপত্রে।
কে এই কণা সরকার? কণা রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের চতুর্থ সেমেস্টারের ছাত্রী। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল, ‘গ্রামীণ চপশিল্প ও সংসার চালনায় তার প্রভাব।’ মালদহের গাজোল ১, গাজোল ২ ও করকোচ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই গবেষণার কাজ চালায় কণা। জানা যায়, কণা একা এই গবেষণার বিষয়টি বেছে নেয়নি। তাঁকে এই কাজে গাইড করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ভূগোলের অধ্যাপক তাপস পাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী কণার মতে, ‘মুখ্যমন্ত্রীর চপশিল্পকে নিয়ে বক্তব্যকে ঘিরে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। সেখান থেকে আমার মাথায় গবেষণার বিষয়টি আসে।’ গবেষণায় উঠে এসেছে, মহিলারা চপ, তেলেভাজা বিক্রি করে মাসে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার করতে পারে। অন্যদিকে ছেলেরা চপ বিক্রি করে মাসে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার করতে পারে। চপশিল্পের মাধ্যমে নহিলারা নিজেদের কতটা স্বনির্ভর করে তুলতে পেরেছেন, সেই বিষয়টিও উঠে এসেছে গবেষণাপত্রে।
এই প্রসঙ্গে কণার ভূগোলের অধ্যাপক তাপস পাল জানান, ‘আমাদের অর্থনীতিতে ৮৩ শতাংশ মানুষ অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন। এই অসংগঠিত ক্ষেত্রের মধ্যে একদিকে যেমন রিক্সাওয়ালা, টোটোওয়ালারা রয়েছেন। তেমনি তেলেভাজা বিক্রেতারাও রয়েছেন। যারা চপ বিক্রি করেন, তাদের উপার্জন কত, সে বিষয়ে কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য আমাদের কাছে নেই। সেজন্যই এই গবেষণা।’ জানা যায়, গবেষণাপত্রের ওপরে ‘নুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চপশিল্প ধারণায় অনুপ্রাণিত হয়ে গবেষণায় চপশিল্প’ এই কথাটি লেখা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে সেটি লেখা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে যে গবেষণাপত্রটি জমা দেওয়া হয়, তাতে অবশ্য ওই বিষয়টি উল্লেখ নেই।