আজ, শুক্রবার জেলা থেকে ট্রেন ধরে যাঁরা অফিসের জন্য বেরিয়ে ছিলেন তাঁরা আটকে পড়লেন। সকালবেলায় হাওড়া স্টেশন থেকে বেরিয়ে হাওড়া ব্রিজের মুখে আটকে গেলেন নিত্যযাত্রীরা। কারণ হাওড়া ব্রিজ স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। একটু এগিয়ে দেখা গেল, ব্রিজ জুড়ে নানা রঙের পতাকা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন আদিবাসী মানুষজন। অনেকেই প্রশ্ন তুললেন, আবার কী হল এখানে? কিছু জানার আগেই ততক্ষণে এমজি রোড, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, ধর্মতলা–সহ মধ্য কলকাতার বেশিরভাগ অংশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
কারা মিছিল করছেন? কী দাবি তাঁদের? এবার সেই মিছিলের ভিতরে গিয়ে জানা গেল, পশ্চিম মেদিনীপুরের আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পরগণা মহলের নেতৃত্বে আদিবাসীরা মিছিলে নেমেছেন। আর তার জেরেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে মধ্য কলকাতা–সহ অফিসপাড়া। তাঁদের দাবি, ধর্মীয় উপাসনার অধিকার দিতে হবে। পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে তাঁদের দেবতা মারানবুড়ুর উপাসনা করেন। কিন্তু ওই জায়গাটি ধ্বংস করে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। আর এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ করতেই পথে নেমেছেন তাঁরা। আজ, শুক্রবার সকালে ডেপুটেশন জমা দিতে তাঁরা হাজির হন হাওড়া স্টেশনে। সেখান থেকে রানি রাসমনি রোডে মিছিল করে ডেপুটেশন দিতে যাওয়াই লক্ষ্য।
উল্লেখ্য, আদিবাসীদের আর একটি জনগোষ্ঠীর (কুড়মি) আন্দোলনের জেরে ট্রেন বাতিল হচ্ছে একাধিক শাখায়। আজ তাঁদের আন্দোলন চতুর্থ দিনে পড়েছে। খড়গপুর–সহ নানা স্টেশনে তার প্রভাব পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কুড়মি জনগোষ্ঠীর দাবি, তফসিলি উপজাতি তালিকাভুক্ত করতে হবে তাঁদের। কুড়মালি ভাষাকে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আর কুড়মিদের সারনা ধর্ম চালু করতে হবে। এবার জাকাত মাঝি পরগণা মহলের দাবি, তাঁদের ধর্মীয় স্থান ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। তা আটকাতে হবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? সূত্রের খবর, পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে আদিবাসীদের দেবতা মারানবুড়ুর উপাসনা স্থল। সেই জায়গাটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এমনকী অনেক অনুরোধ করেও তা আটকানো যায়নি। সেখানে টুরগা পাম্প স্টোরেজ প্রজেক্ট নামে একটি নির্মাণ হচ্ছে। ফলে ধর্মীয় কাজে বাধা পাচ্ছেন আদিবাসীরা। আর ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। বাধ্য হয়ে শহরে এসে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। আর তাতেই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।