পূর্ব বর্ধমানের গ্রামের বাসিন্দা রেণু খাতুনের ডান হাত কেটে দিয়েছিল তার স্বামী। রেণুর কাটা হাত কি জোড়া লাগানো যাবে? সেটাই এখন প্রশ্ন। সাধারণত শরীরের কোনও অঙ্গ কেটে গেলে বা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই তা জোড়া লাগানো সম্ভব। কিন্তু, রেণুর ক্ষেত্রে তা আদৌও সম্ভব হবে নাকি তাকে সারা জীবন হাত কাটা অবস্থায় থাকতে হবে সেটাই ভাবছে তার পরিবার। বর্তমানে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন রেণু। সরকারি চাকরি পাওয়ার আগে তিনি সেই হাসপাতালে নার্সের কাজ করতেন। তবে চাকরি পাওয়ার পর তিনি হাসপাতালের নার্স থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে রেণুর স্বামী শের মহাম্মদ শেখ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ডান হাতের কব্জি কেটে দিয়েছিল। প্রথমে তাকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা সময় কেটে গিয়েছে। ফলে এই অবস্থায় তার হাত জোড়া লাগানো যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। যদিও এ বিষয়ে প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসক অনুপম গোলাস জানান, ‘কাটা হাতটিকে কীভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে তার ওপরে নির্ভর করছে হাত জোড়া লাগানো যাবে কিনা। যদি ঠিকমতো সংরক্ষণ করা না হয় এবং তাতে যদি পচন ধরে তাহলে কোনওভাবে তা জোড়া লাগানো সম্ভব নয়।’
অন্যদিকে, এসএসকেএম হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান গৌতম গুহ জানান, ‘হাতের কাটা অংশ সংরক্ষণ করা থাকলে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টার মধ্যে জোড়া লাগানো যায়। কিন্তু, এই ঘটনাটি চল্লিশ ঘণ্টার বেশি সময় যদি হয়ে থাকে তাহলে তা সম্ভব নয়।’ সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রথমে কাটা অংশটিকে প্লাস্টিকে মুড়ে বরফ দিয়ে সংরক্ষণ করতে হয়।’ তবে চিকিৎসক অনুপম বাবু জানিয়েছেন, সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে ৩৬ ঘণ্টা পরেও কাটা অংশ জোড়া লাগানো যায়। আমি নিজেই ৩৬ ঘণ্টা পরে একটি কাটা হাতের সফল অস্ত্রোপচার করেছিলাম।’ তবে রেণুকে পিজির মতো সরকারি হাসপাতালে সঠিক সময় নিয়ে গেলে কাটা হাত জোড়া দেওয়া সম্ভব ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।