নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে যাওয়ায় বড়ঞার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা এখন জেলে। তাঁর পুকুরে ফেলে দেওয়া মোবাইল থেকেও তথ্য উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। নানা চেষ্টা করেও জেল থেকে ছাড়া পাননি তিনি। এই পরিস্থিতিতে আজ, বুধবার তাঁর এলাকাতেই তৈরি তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিস বুলডোজার দিয়ে সলিল সমাধি করে দিল পুলিশ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো আজ পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। ফলে জেলে থেকেই জীবনকৃষ্ণ জানতে পারলেন তাঁর পছন্দের পার্টি অফিস আর নেই।
এদিকে এই পার্টি অফিস ভীষণ পছন্দ জীবনকৃষ্ণের কাছে। যা আজ মাটিতে ধুলোয় মিশে গেল। ২০২১ সালে বড়ঞা ব্লকের আফ্রিকা মোড়ে এই দলীয় কার্যালয়টি নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিবাদ গড়ায়। তখন স্থানীয় বাসিন্দা শফিউর রহমান এই ভবনটি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এই পার্টি অফিসটি নিয়ে তাঁর অভিযোগ ছিল, সরকারি জায়গা জবরদখল করে পার্টি অফিস তৈরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এরপর মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। চলে সওয়াল–জবাব। তারপর আদালত সম্প্রতি ওই ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়।
ঠিক কী ঘটেছে আজ? অন্যদিকে আজ, বুধবার বড়ঞা থানা পুলিশ সকালেই ওই এলাকাকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলে। তখনই বোঝা যায় কিছু একটা ঘটতে চলেছে। তারপর কান্দি মহকুমাশাসকের ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আজ বেআইনি নির্মাণ বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে গোটা অপারেশনটি করেন। যদিও স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যরা বলছেন, এটা কোনওদিন পার্টি অফিস ছিল না। তবে যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস করেন তাঁরা এখানে গল্প করতেন। বিধায়ক জীবনকৃষ্ণও এখানে বসতেন। তাঁর এটি পছন্দের অফিস ছিল।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই অফিসটি ভেঙে ফেললেও কেউ প্রতিবাদ করেননি। এমনকী এলাকায় কোনও উত্তেজনা তৈরি হয়নি। জীবনকৃষ্ণ এখানে বসতেন এবং বিকেলে আড্ডা মারতে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। তবে এখানে বসে কখনও টাকার লেনদেন করেছেন বলে কেউ শোনেননি। এমন কোনও তথ্য পাননি কেন্দ্রীয় সংস্থাও। তবে অফিসটি বড় ছিল বলে ভাঙতে সময় লাগে। এই খবর জীবনকৃষ্ণ পেলেও তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে জেলায় বিজেপি, কংগ্রেসেরও বহু কার্যালয় রয়েছে সরকারি জায়গায় বলে মানুষের অভিযোগ। যদিও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ইউনিয়ন অফিসও ভাঙা হয়।