নিয়োগ দুর্নীতিতে একের পর এক রায় দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছে 'ভগবান' হয়ে উঠেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই তিনি বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। শুধু তাই নয় তিনি জানিয়ে দিয়েছেন,চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেবেন। যার একের পর এক রায় হাসি ফুটিয়েছিল চাকরি প্রার্থীদের মুখে। সেই চাকরিপ্রার্থীরা কী বলছেন তাঁর এই ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তে?
চাকরি প্রার্থী হতাশ, নাকি...
চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন এখন থামেনি। নানা ক্ষেত্রে নিয়োগের দাবি নিয়ে এখনও তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই আন্দোলনকারীরা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই পদ ছেড়ে দেওয়ার পর খবর শোনার পর কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েন। পরে বিচারপতি জানিয়েছেন, তিনি রাজনীতিতে যোগ দেবেন তা শুনে আশাবাদী চাকরি প্রার্থী বলছেন, 'এটা একেবারেই ওঁনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। রাজ্যের নানা দুর্নীতির বিষয় উনিই সামনে এনেছেন। আমার আশা করব রাজ্য সরকার এবং হাইকোর্ট তাঁর দেখানো পথেই যেন আমাদের সুবিচার করেন। বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা যেন চাকরি ফেরত পাব। বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগ করলেও তিনি যে আমাদের হয়ে লড়বেন এটা আমাদের আশা।'
পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরি প্রার্থী মঞ্চের সুশান্ত ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কালো কোর্ট পড়ে কোনও আইনজীবী বা বিচারব্যবস্থার অধীনে থাকে ব্যক্তিদের রাজনীতিতে যাওয়া উচিত নয়। তবে বর্তমান যা অবস্থা তাতে অনেকই যাচ্ছেন।
চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশে কী বললেন বিচারপতি
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে চাকরি প্রার্থীদের উদ্দেশে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'তেমন কিছু আমার বলার নেই বিচারপতি হিসেবে। অসহায় মানুষগুলির জন্য উপদেশ দিতে পারতাম, কাউকে সুপারিশ করতে পারতাম। এই ভাবেই আমি পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতাম। এটা একেবারেই ব্যতিক্রমী। ২৩-২৪ বছরের আইনজীবী জীবনে এরকম কোনও বিচারপতি দেখিনি, যাঁরা অসহায়দের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বিচারপতি হওয়ার পর কোন এজলাসে কী হচ্ছে দেখতে পাই না। কিন্তু আমি দেখেছি, আমার দেশের মানুষ খুব অসহায়। আইনি বিষয়েও তো বটেই। তাই বোধ বুদ্ধি অনুযায়ী, ক্ষমতার মধ্যে থেকে বলেছি। সেটা তো আর সম্ভব নয় আমার পক্ষে। কিন্তু আশা করব, আদালতের অন্য অনেক বিচারপতির থেকে এই সুবিধা পাবেন। আশা করা ছাড়া আর কী উপায় আছে?'
আরও পড়ুন। '২০২৬-তে মুখ্যমন্ত্রী হওয়াই লক্ষ্য জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের', আয়নায়…, দাবি বাবুলের
আগামী আগস্ট মাসে বিচারপতি অবসর গ্রহণের কথা ছিল। তাঁর পাঁচ মাস আগে তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন। মঙ্গলবার শেষবারের মতো আদালতে যাবেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে তাঁর পদত্যাগ পত্র পাঠাবেন।