বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর বক্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তাই সুজাতা মণ্ডলকে সেন্সর করল তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকী দলের অন্যান্য নেতাদেরও সতর্ক করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বাঁকুড়ার সতীঘাটে দলীয় বৈঠক ডেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর দুই লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতা সমীর চক্রবর্তীকে পর্যবেক্ষক করা হয়েছে। তিনি জেলায় এসে দলীয় কাজ শুরু করেছেন। বুধবার বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার দলীয় নেতাদের নিয়ে তিনি বৈঠক করেন। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুই কেন্দ্রের প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী ও সুজাতা মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে প্রচারে গিয়ে দলের গাইডলাইনের বাইরে মন্তব্য করা থেকে সুজাতাকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। ব্যক্তি আক্রমণ না করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। যদিও এই বিষয় নিয়ে সুজাতা মণ্ডল বলেছেন, ‘দল জানে আমি অন্যায় করতে পারি না। বিরোধীরা এসব অভিযোগ তুলছে। তবে আমি কাউকে হুমকি দিইনি। দলের অনুশাসন মেনে মানুষের দুয়ারে ভোট চাইছি।’ তৃণমূল কংগ্রেসের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘দলের বৈঠকে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। প্রচার কর্মসূচিতে সবাইকে মেপে কথা বলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা বিজেপিকে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে হারাব। সেই শপথ নিয়েই সবাই কাজ করছে।’
আরও পড়ুন: গার্ডেনরিচে আবার বাড়ল মৃত্যুর সংখ্যা, চারদিন পার করে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার দেহ
অন্যদিকে গত মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল ওন্দায় প্রচার করেন। সেখানে নতুনগ্রামের বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আপনারা ভোটটা দেন বিজেপিকে। মাসি, ভোটটা বড় ফুলে দিচ্ছো। আর চাওয়ার বেলা ছোট ফুলকে চাইছো। দেখো মাসি, আমি এবার একটা ক্লিয়ার কাট কথা বলছি, যদি এবার এখান থেকে দেখি তৃণমূল লিড পায়নি তাহলে সত্যিই তোমাদের কাছে আমরা কেউই আর অভিযোগ শুনতে আসব না। তোমরা বিজেপির সঙ্গে বুঝে নেবে। কারণ, এখানে বারবার বিজেপি জিতবে আর আমরা কাজ করব সেটা হতে পারে না।’
এই মন্তব্যের পরই অস্বস্তিতে পড়ে যায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিষয়টি শীর্ষস্তরে পৌঁছতেই সুজাতা মণ্ডলকে সেন্সর করার নির্দেশ আসে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী এবার কাজ হয়েছে। সুজাতার বক্তব্যে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েছে দল। তার জেরেই সুজাতাকে সতর্ক করা হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘সুজাতার ওইসব মন্তব্যের জেরে দলের অন্দরে অস্বস্তি বেড়েছে। ভোটারদের মধ্যেও তার প্রভাব পড়ে। তাতে বিরোধীদের সুবিধা হতে পারে। এই কারণে তাঁকে সেন্সর করা হয়েছে।’ যেখানে দেখা যাচ্ছে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ জেতার জন্য রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছে সেখানে এমন বক্তব্যকে মেনে নেওয়া কঠিন।