নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ করতে বাধ্য রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গেই প্রথম এই আইন কার্যকর করা হবে বলে দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল তৃণমূলের ক্ষমতা নেই কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করার। রাজ্যের শাসকদল সুপ্রিমোকে সতর্ক করে শুক্রবার সন্ধ্যায় দিলীপ বলেন, বাংলাতেই প্রথম নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ করা হবে।
গোড়া থেকেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রস্তাবিত আইন আনাকে কেন্দ্র করে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে মমতা-সহ সংঘাত বেধেছে পাঁচ রাজ্যের অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর। এই ৫ রাজ্যে কোনও মতেই এই আইন প্রয়োগ করা যাবে না বলে তাঁরা দাবি করেছেন।
নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় প্রথম সুর চড়ান কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তাঁর পিছু পিছু বিলের বিরোধিতায় সরব হন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের দাবি, এই আইন ‘সংবিধান বিরোধী’।
শুক্রবার নাগরিক আইন অমান্য করারর ঘোষণা করেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ ও ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে মুসলিম ছাড়া পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত অন্যান্য ধর্মাবলম্বী অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব প্রদানের নিদান রয়েছে।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে মমতা জানান, রাজ্যে নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ করা হবে না। সেই সঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, কোনও পরিস্থিতিতেই রাজ্য সরকারকে ওই আইন প্রয়োগ করার জন্য বাধ্য করতে পারে না কেন্দ্রে আসীন বিজেপি সরকার। পাশাপাশি, রবি থেকে বুধবার চার দিন ব্যাপী রাজ্যজুড়ে বিল-বিরোধী প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করার ঘোষণাও করেছেন নেত্রী। এমনকি তিনি নিজেও পথে নেমে প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি উড়িয়ে দিয়ে দিলীপ ঘোষ পালটা জানিয়েছেন, ‘আগেও উনি ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত ও নোটবন্দি নীতির বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সেগুলি প্রয়োগ করতে অসুবিধে হয়নি। এবারও রাজ্যে নতুন নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ করা হবে। গটনা হল, বাংলাতেই প্রথন নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ করা হবে।’
নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরোধিতা নিয়ে দিলীপ ঘোষের পালটা প্রশ্ন, ‘রাজ্যে ভোট ব্যাঙ্ক হারানোর ভয়েই কি এই পদক্ষেপ? একটা বিষয় পরিষ্কার করে দেওয়া দরকার, নাগরিকত্ব আই রাজ্যে প্রয়োগ করা হবে। মমতা বা তাঁর দলের তা রোখার ক্ষমতা নেই।’
বিজেপি রাজ্য সভাপতির অভিযোগ, অনুপ্রবেশকারী নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুশ্চিন্তা থাকলেও হিন্দু শরণার্থীদের নিয়ে তাঁর মাথাব্যথা নেই, যাঁরা গত কয়েক দশক যাবত্ এই আইন আসার অপেক্ষায় ছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীও। তাঁর দাবি, ‘বাংলায় বিক্ষোভকারী অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কী কারণে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না মমতা? জনতাকে তিনি নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার জন্য প্ররোচনা দিচ্ছেন। যদি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে তিনি চিন্তিত হতেন, তাহলে এখন কেন হিন্দু শরণার্থীদের বিষয়ে কিছু বলছেন না?’