টাকা নিয়ে টিকিট বিক্রি বিতর্কের মধ্যেই দলের দুটি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। বিধায়ক পদ ছাড়ার কথাও তিনি জানিয়েছিলেন। আর এবার দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের বিধায়ক করিম চৌধুরীর পথ অনুসরণ করে নির্দল প্রার্থীদের পাশে থাকার কথা জানালেন তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে বিধায়ক করার জন্য যাঁরা পরিশ্রম করেছিলেন তাদের অনেকেই এবার ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা তৃণমূল থেকে টিকিট পাননি। নির্দল হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন। এবার তাঁদের পাশে তিনি দাঁড়াবেন। অর্থাৎ এক প্রকার দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দিলেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
পঞ্চায়েত ভোটের আবহে বলাগড়ের ব্লক সভাপতির সঙ্গে মনোরঞ্জনের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। বিধায়কের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে টিকিট বিক্রির অভিযোগ তুলেছিলেন ব্লক সভাপতি। তবে সেই অভিযোগ পুরোপুরি খারিজ করে মনোরঞ্জন ব্যাপারী জানিয়েছিলেন প্রমাণ করতে পারলে তিনি দলের পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। এরপর গত বুধবার তৃণমূলের দুটি পদ থেকে ইস্তফা দেন। ফেসবুকে একটি পোস্ট করে তিনি সেকথা জানান সেইসঙ্গে তিনি বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন। রাজ্য সরকারের প্রাক্তন কর্মী মনোরঞ্জন গ্র্যাচুইটি এবং পেনশনের টাকা পেলেই বিধায়ক পদ ছেড়ে দেবে বলে জানান। এরফলে সেখানে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ফাটল আরও বেড়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, বলাগড়ে ৩ টি জেলা পরিষদের আসন রয়েছে। যার মধ্যে একটিতে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক অসীম মাঝি অন্যদিকে, একটিতে দাঁড়িয়েছেন মনোরঞ্জনের অনুগামী নির্দল প্রার্থী। সে ক্ষেত্রে নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করতে চলেছেন মনোরঞ্জন। ফলে স্বাভাবিকভাবে অস্বস্তিতে তৃণমূল।
অন্যদিকে, এই ব্লকে রয়েছে ১৩ টি পঞ্চায়েতে ২২৪টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে তৃণমূল থেকে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন ২৫ জন। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩৮ আসনের মধ্যে ৯ জন নির্দল। যদিও নির্দল থেকে যাঁরা ভোটে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা অনেকেই নির্বাচনে লড়বেন না বলে জানিয়েছেন ব্লক সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘যাঁরা নির্দল থেকে দাঁড়িয়েছেন তাঁদের অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁরা লিফলেট ছড়িয়ে প্রচার করবেন যে তাঁরা নির্বাচনে লড়বেন না। তৃণমূলের সঙ্গে তাঁরা প্রচার করবেন।’ উল্লেখ্য, মনোরঞ্জন জানিয়েছিলেন, ‘যাঁরা আমার জন্য বিধানসভা ভোটে জীবন বাজি রেখেছিলেন তাঁদের হয়ে আমি প্রচার করব। দল থেকে টিকিট পেলেও পাশে থাকব, না পেলেও থাকব।’
এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির রাজ্য নেতা স্বপন পাল বলেন, ‘বিধায়ক যে অবস্থান নিয়েছেন সেটা হওয়ারই ছিল।’ অন্যদিকে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘নির্বাচনের কাজে এখন দল ব্যস্ত রয়েছে। কেউ দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করবেন না। তবুও যদি এরকম কেউ করে তাহলে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’