ভোটের আগে হাপুস নয়নে কেঁদে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন একসময়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী সোনালী গুহ।ভোটের পর তৃণমূল ফের ক্ষমতায় ফিরতেই ভোলবদল সোনালীর।এবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে দলে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তিনি। সেইসঙ্গে তিনি আরও ইঙ্গিত দিলেন, আগামিদিনে অনেক নেতাই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে আসবেন।
শনিবার টুইটে তৃণমূল নেত্রীর উদ্দেশে সোনালী গুহ লেখেন, ‘সম্মানীয়া দিদি, আমার প্রণাম নেবেন, আমি সোনালী গুহ, অত্যন্ত ভগ্ন হৃদয়ে বলছি যে আমি আবেগপূর্ণ হয়ে চরম অভিমানে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্য দলে গিয়েছিলাম। যেটা ছিল আমার চরম ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু সেখানে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারিনি। মাছ যেমন জল ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনই আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। দিদি, আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, দয়া করে আমায় ক্ষমা করে দিন। আপনি ক্ষমা না করলে আমি বাঁচব না। আপনার আঁচলের তলে আমায় টেনে নিয়ে বাকি জীববটা আপনার স্নেহতলে থাকার সুযোগ করে দিন।’ সেই বিবৃতির শেষে জুড়ে দেন, ‘ধন্যবাদান্তে আপনার স্নেহের সোনালী।’
দলত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করা বিজেপি নেত্রী সোনালী গুহ জানান, বিজেপি নেতারা তাঁকে এড়িয়ে চলছিলেন। কোনও কর্মসূচিতেই তাঁকে ডাকা হত না। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তো ফোনই ধরেন না। নিজের অসুবিধার কথা মুকুল রায়কে জানাবেন, সেটাও পারছিলেন না। কারণ, মুকুল তো নিজের কেন্দ্রে প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। বিজেপিতে তাঁর দমবন্ধ হয়ে আসছিল।
সোনালী গুহ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান,‘দলের সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করব না।তবে তৃণমূলের ক্ষতি করার জন্য কেন প্রতিপক্ষ বিজেপিতে গেলেন সোনালীদি? আজ যদি তৃণমূলের খারাপ ফল হতো, তাহলে এরাই সর্বশক্তি দিয়ে তৃণমূলকে শেষ করতে চাইত। যাতায়াতের ব্যাপারটা এরা সুবিধাবাদী পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।’
এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানান, ‘টুইটে উনি মান-অভিমানের কথা লিখেছেন। মান–অভিমান দিয়ে তো রাজনীতি চলে না। এটা ওনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। উনি নিজের ইচ্ছায় বিজেপিতে এসেছিলেন আবার নিজের ইচ্ছায় বিজেপি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।' উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় নাম ছিল না সোনালী গুহের।সাতগাছিয়া কেন্দ্র থেকে তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি। এরপরই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যান তিনি। কিন্তু বিজেপিতে গিয়েও সাতগাছিয়া কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়নি সোনালী গুহকে।