বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেও বেঁকে বসেছিল বিবাহিত প্রেমিক! প্রেমে প্রত্যাখিত হয়ে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তরুণী। টানা ১৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর অবশেষে জীবন যুদ্ধে হার মেনেছেন ওই তরুণী। রবিবার ওই তরুণী মৃত্যুর পর তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে হুগলির গোঘাটের শাওড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। ঘটনার জেরে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গোঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের সদস্যরা। অবশ্য ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতা ওই তরুণীর নাম আয়েষা খাতুন। গোঘাটের শাওড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। ওদিকে অভিযুক্ত যুবকের নাম মোল্লা নাসিরুল হক। গোঘাটেরই আমডোবা গ্রামে বাড়ি তার।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই অভিযুক্তের স্ত্রী-সন্তান থাকার সত্বেও সেই তথ্য গোপন করে বছর দেড়েক আগে যুবতীকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছিল। এমনকী, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার তাঁর সঙ্গে সহবাস করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এরইমধ্যে ওই তরুণী জানতে পারেন যে, নাসারুল আগে থেকেই বিবাহিত। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। নাসারুলের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, বারবার ওই তরুণীকে মৃত্যুর প্ররোচনা দিত সে।
মৃত্যুশয্যায় নিজের বয়ানে ওই তরুণী জানিয়েছিলেন, ‘নাসারুলের সব ঘটনা জেনে যাওয়ার পরই তাঁকে মরে যাওয়ার জন্য প্ররোচনা দিত ও। বলত, 'তুমি মরে যাও'। ওর বাড়িতে গেলে আমাকে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিত। এমনকী, হুমকি দিয়েছিল যে, পুলিশে জানিয়ে লাভ নেই। কারণ, পুলিশকে পয়সা দিয়ে দিলে কিছু করতে পারবে না। রাস্তায় আমাকে ভীষণ অপমানিত করত ও। লজ্জায় কাউকে মুখ দেখাতে পারব না বলে আর বাড়ি থেকে বের হতাম না। সেই কারণেই বিষ খেয়েছি আমি।’
এরপর ওই তরুণী বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় বেঁকে বসে অভিযুক্ত। সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন ওই তরুণী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ অগস্ট বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই তরুণী। পরিবারের লোকজন তড়িঘড়ি ওই তরুণীকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভরতি করান। রবিবার রাতে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। এ ঘটনার পরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। ঘটনার তদন্তে নেমেছে গোঘাট থানার পুলিশ। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।