পুরভোট করতে প্রস্তুত রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্য সরকারের সবুজ সংকেত পেলেই ভোট দিনক্ষণ ঘোষণা করার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের এখন প্রধান লক্ষ্যই হল করোনা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করা। রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে এলেই পুরভোট করানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানান, নবান্নের তরফে এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি। সরকার জানালেই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। ভোটের প্রস্তুতির কাজ অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। বাকি প্রস্তুতি সারতে সময় লাগবে না। উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শেষ হয়েছে। এই তালিকার ভিত্তিতেই কলকাতা সহ বিভিন্ন পুর এলাকায় মোট কত ভোটার আছে, সেই তালিকা পাওয়া যাবে। ওয়ার্ডভিত্তিকভাবে চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে।
ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুরভোট করানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। নবান্ন সূত্রে খবর, পুজোর আগে সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ পুরভোট করতে চায় রাজ্য। সেই সময় করানো না গেলে দীপাবলির আগে আর ভোট করানো যাবে না। কারণ, অক্টোবর মাস জুড়ে উৎসবের মরশুম চলবে। তাই সেইসময় ভোট করানো যাবে না। তবে তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, রাজ্যের মানুষকে দ্রুত ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ চলছে। সেই ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ সন্তোষজনক জায়গায় এসে গেলেই রাজ্যে ভোট করানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গতকাল এইমসের তরফে ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে সারা দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, তা বুঝে না নিয়ে ভোট করাতে চাইছে না। উল্লেখ্য, কলকাতা-সহ ১১৬টি পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।
সদ্য রাজ্যে বিধানসভা ভোট পর্ব শেষ হলেও এখনও রাজ্যে ৬টি আসনে উপনির্বাচন করানো প্রয়োজন। গত ২ মে ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, এই সব আসনে আগামী ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন করানো প্রয়োজন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্য সরকার এই অবস্থায় পুরভোট করানোর ব্যাপারে তৎপরতা না দেখালে করোনা পরিস্থিতির সুযোগে সরকার বিধানসভা উপনির্বাচন টালবাহানা হতে পারে। তাই রাজ্য সরকারের তরফে পুরভোট করানোর ব্যাপারে আগ্রহ দেখানো স্বাভাবিক। এখন দেখার, কবে রাজ্য সরকার ভোট করানোর ব্যাপারে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে বার্তা দেয়।