রাজ্যপাল বনাম রাজ্য সরকার সংঘাত এখনও বজায় আছে। তবে সদ্য সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়েছে রাজভবন। এই আবহে এবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বেতন প্রক্রিয়া নিয়ে বৈঠক ডাকল নবান্ন। ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই চিঠি গিয়েছে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারের কাছে। আর তখন থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ঠিক কী নিয়ে বৈঠক? নবান্নের চিঠি থেকে যেটুকু জানা গিয়েছে, বিকল্প বেতন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হবে। তারপরই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষক সংগঠন নিজেদের মধ্যে বৈঠক সেরে নিতে চায় বলে সূত্রের খবর।
কোনও আশঙ্কা করছে শিক্ষক সংগঠনগুলি? এই বিকল্প বেতন প্রক্রিয়া নিয়ে আগেই আপত্তি তোলা হয়েছিল। এমনকী যৌথ প্রেস বিবৃতি দিয়েছে বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি। রাজ্যের মোট ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি আশঙ্কা করছে, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সমস্ত স্বাধিকার কেড়ে বিকাশ ভবনের কেন্দ্রীভূত করা হবে। তাই বিষয়টি নিয়ে নবান্নে বৈঠক ডাকা হয়েছে। আর সেটা কার্যকর হলে বেতন দেওয়ার অধিকার আর বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে থাকবে না। এমনই একটা ভয় কাজ করছে। বিকাশ ভবন যদি কারও বেতন আটকে দেয় সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কিছু করার থাকবে না। যদিও সরকারপন্থী শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার বক্তব্য, এমন আশঙ্কা সম্পূর্ণ অমূলক।
ঠিক কী আছে বিবৃতিতে? প্রেস বিবৃতিতে শিক্ষক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, এই ব্যবস্থা চালু হলে বদলি–সহ নানা কিছু চালু হতে পারে। তার মধ্যে কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী অর্থনৈতিক অবরোধের কথা বলেছেন। তারপর এমন বৈঠকে ডাক নানা গুঞ্জন তৈরি করেছে। এই বিষয়ে তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা’র পক্ষে সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মণিশঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘স্বাধিকারে হস্তক্ষেপের কোনও বিষয় নেই। যে অর্থ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বণ্টন হতো সেটাই সরকারি কোষাগার থেকে সরাসরি যাবে। এতে বরং বিশ্ববিদ্যালয় চাপমুক্ত হবে। আমরা রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’ আগামী বুধবার দুপুরে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে রাজ্যের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারকে।
আরও পড়ুন: বিশ্বকর্মা পুজোর প্রাক্কালে বন্ধ হয়ে গেল জুটমিল, ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে কর্মহীন বিপুল শ্রমিক
কারা বৈঠকে ডাক পেল? আগামী বুধবার নবান্নে ডেকে পাঠানো হয়েছে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারকে। সেই তালিকায় আছে— কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, ডায়মন্ডহারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়, কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, সিধো–কানহো–বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়েস্টবেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি। এখানের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারদের থাকতেই হবে বৈঠকে।