গোল্ড ফেশিয়াল, সিলভার ফেশিয়ালের মতো এখন নতুন এসেছে ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল। মুখের সৌন্দর্য বাড়াতে, বার্ধক্য এড়াতে অনেকেই এই পথে হাঁটছেন। সিনেমা সিরিজে দেখা রক্ত চোষা মানুষ অর্থাৎ ভ্যাম্পায়ারের মতো গ্ল্যামারাস হতে গিয়ে বিভিন্ন পণ্য প্রয়োগের ফলে মুখের রং বদলে যাচ্ছে। গ্ল্যামার আসছে। আবার কখনও কখনও এটি বড় ক্ষতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এমনই একটি ঘটনা নিউ মেক্সিকো থেকে সামনে এসেছে, যেখানে তিন জন মহিলা একটি স্পাতে ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল করাতে গিয়ে বিরাট বিপদে পড়েছেন। এই তিন জন মহিলার মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছে। আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ অ্যান্ড কন্ট্রোল (সিডিসি) এমনটাই তথ্য দিয়েছে।
- জেনে নিন পুরো বিষয়টি আসলে কী
এই মহিলারা মেক্সিকোতে একটি লাইসেন্সবিহীন স্পা-তে ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল করিয়েছিলেন কিন্তু এটি করার পরে, মহিলাদের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করেছিল এবং এর পরে তদন্ত করলে দেখা গিয়েছিল যে তিন মহিলাই এইচআইভিতে সংক্রামিত হয়েছিলেন। এতে ওই মহিলারা এমনই এক কসমেটিক ইনজেকশন নিয়েছিলেন যা ওই ফেশিয়ালের জন্য দায়ী। এরপর এইচআইভি রিপোর্ট আসার পর, মহিলারা বলেছিলেন যে তাঁরা মাদক গ্রহণ করেননি বা কোনও এইচআইভি সংক্রামিত ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সংস্পর্শেও আসেননি। আসলে এই খবরটি ২০১৮ সালের। ওই বছর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত স্পা-টিকে অবহেলার কারণে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল, সেই সময়ে নিউ মেক্সিকো স্বাস্থ্য বিভাগের সহায়তায় এই স্পাটি বন্ধও করে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে যাঁরা ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল করেছেন, তাঁদেরও বিনামূল্যে পরীক্ষা করা হবে। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ২০০ জনের পরীক্ষা করা হয়েছিল কিন্তু সেইসময়ে কাউকেই সংক্রামিত পাওয়া যায়নি।
পরে জানা গিয়েছে যে ওই দুই জন মহিলার মধ্যে দু'জন ছিলেন মধ্য বয়সী। সিডিসি এবং স্বাস্থ্য বিভাগের তদন্তকারীরা শেষ পর্যন্ত নির্ধারণ করেছেন যে ৫৯ জন স্পা ক্লায়েন্ট এইচআইভি-এর সংস্পর্শে এসেছেন। এর মধ্যে ২০ জন ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল পেয়েছেন। তদন্তকারীরা বলেছেন যে স্পাটিতে এইচআইভি দূষণের মূল জারণ অজানা রয়ে গিয়েছে।
যারা চিকিৎসা বা প্রসাধনী কারণে ইনজেকশন নেওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁদের অনুরোধ করা হচ্ছে যে ইনজেকশন প্রদানকারী, ক্লিনিক বা স্পা লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং প্রশিক্ষিত কিনা এবং তাঁদের পণ্য এফডিএ অনুমোদিত কিনা এবং একটি নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে কেনা হচ্ছে কিনা, তা জেনে নিয়ে তবেই পরবর্তী পদক্ষেপ করুন।
জেনে নিন কেমন হয় ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়ালের পুরো প্রক্রিয়া
এই ফেশিয়ালের ক্ষেত্রে হাত থেকে রক্ত বের করে মুখে ইনজেকশন দেওয়া হয়, একে বলে প্লেটলেট সমৃদ্ধ প্লাজমা মাইক্রোনিডলিং প্রক্রিয়া। এই ফেশিয়ালের পুরো প্রক্রিয়ায় ৪০ থেকে ৫০ মিনিট সময় লাগে। কারো মুখে দাগ বা অন্যান্য দাগ থাকলে তা দূর করার জন্য এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, হাত থেকে নেওয়া রক্ত ইনজেকশনের সাহায্যে একই ব্যক্তির মুখে লাগানো হয়। মুখের উপর এই প্রক্রিয়াটি করে, এই প্লেটলেটগুলি ত্বকের নতুন কোষের বৃদ্ধি এবং কোলাজেনকে বাড়িয়ে তোলে, যাতে আপনি অকাল বার্ধক্যের শিকার না হন।