ইট বোঝাই লরি খালি করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটল। লরি উলটে গিয়ে ইট চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। এছাড়াও আহত হয়েছেন ৫ জন শ্রমিক। মৃতের নাম লাল্টু অধিকারী। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের ২ নম্বর অঞ্চলের রাজোগ্রামের। আজ সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যার মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন: নয়নজুলিতে একুশের সমাবেশ ফেরত বাস, মৃত ১ তৃণমূল সমর্থক, হসপাতলে বহু
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল সাড়ে ৯ টার সময় একটি লরি বোঝাই করা ইট খালি করতে যাচ্ছিলেন ৬ শ্রমিক। রাজোগ্রাম থেকে আমনপুর যাওয়ার সময় মাঠের মাঝখানে হঠাৎ এই লরিটি ধানের জমিতে পালটি খেয়ে যায়। চালক ও খালাসি গাড়ি থেকে ঝাঁপ দিয়ে কোনওভাবে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। ৬ জন শ্রমিকের মধ্যে ২ জন শ্রমিক চাপা পড়েছিলেন। বাকি ৪ জন ধান ক্ষেতের মধ্যে পড়ে যান। ইট চাপা পড়া ২ জন শ্রমিকের মধ্যে ১ জনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। বাকি ৫ আহত শ্রমিককে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১ জনের অবস্থা গুরুতর। এই ঘটনায় এলাকায় যথেষ্ট চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে।
সনাতন ঘোষ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ওই লরিতে প্রায় ৮ হাজার ইট ছিল। রাজোগ্রামে ২ হাজার ইট নামিয়ে লরিটি আমনপুরে যাচ্ছিল। সেই সময় ইট সমেত লরিটি পাশের একটি ধান ক্ষেতে উলটে যায়। লরিতে মোট ৬ জন শ্রমিক ছিলেন। তার মধ্যে ২ জন শ্রমিকের উপর ইট চাপা পড়ে। বাকি ৪ জন শ্রমিক ধান ক্ষেতে গিয়ে পড়েন। এর মধ্যে ঘটনাস্থলে ইট চাপা পড়া এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।’ জানা গিয়েছে, প্রায় ২ হাজার ইট ওই শ্রমিকের উপর চাপা পড়েছিল। সেগুলো সরিয়ে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে লরিটি উলটে যাওয়ার সময় চালক এবং খালাসি ঝাঁপ দিয়ে রক্ষা পেয়েছেন।
শ্যামসুন্দর মণ্ডল মণ্ডল নামে অন্য প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দুর্ঘটনার সময় বেশ গতিতে যাচ্ছিল লরিটি। এরপর কাঁপুনি খেতে খেতে একসময় সেটি উলটে যায়। তিনি বলেন, ‘আমার সকলকে শাবল, কোদাল নিয়ে আসতে বলি। লরিতে থাকা শ্রমিকরা চিৎকার করে জানান, তাঁদের কয়েকজন ইটের নিচে চাপা পড়েছে। তখন আমরা ছুটে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি। প্রথমে উদ্ধার করি তিনি কথা বলতে পারছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় জনের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। তাঁর মুখ দিয়ে নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কা জনক।