ওপরে ইংরেজি, মাঝে উর্দু, শেষে হিন্দি। বাংলার কোনও স্থান নেই। আসানসোল পুরনিগমের সাইনবোর্ডের এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই বিতর্কের সূত্রপাত। ঝোপ বুঝে কোপ মারার মতো আওয়াজ চড়াতে থাকে বিজেপি–ও। ছবি শেয়ার করে বিতর্ক বাড়ান বিজেপি–র রাজ্য মুখপাত্র তরুণজ্যোতি তিওয়ারিও। প্রচার করা হয় তৃণমূল–চালিত আসানসোল পুরনিগমে বাংলা ভাষা উপেক্ষিত। বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে উত্তেজনার পারদ আরও তোলার চেষ্টা করেন। তাতে ট্যাগ করা হয় ‘বাংলাপক্ষ’–কে। তখনই ঝোলা থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়ে।
আসানসোলের বাসিন্দারাই পুরনিগমের মূল ভবনের ফটকের সম্পূর্ণ ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেন। দেখা যায়, পুরনিগমের মূল ভবনের গায়ে বাংলার বড় বড় হরফে ‘আসানসোল পুরনিগম’ সাইনবোর্ডটি রয়েছেই। আর তার ঠিক নীচেই রয়েছে ইংরেজি, উর্দু ও হিন্দু ভাষার বোর্ডটি। অর্থাৎ বিতর্কিত ছবিটি এমন ভাবে দেখানো হয়েছে যাতে বাংলা বোর্ডটা চোখেই না পড়ে। সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতো, ছবিটি ক্রপ করে বা কেটে দেখানো হয়েছে।
ঘটনার কথা জানতে পেরে এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেন আসানসোল পুরনিগমের মেয়র জীতেন্দ্র তিওয়ারি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। অভিযুক্ত বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে শুক্রবার রাতে এক টুইটে জানায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ। যারা এই বিকৃত ছবিটিকে ফরওয়ার্ড করেছে বা আরও ছড়িয়ে দিয়ে বিতর্ক বাড়িয়েছে তাদেরও বেশ কয়েকজনকে ধরেছে বলে দাবি পুলিশের। এমন ধরনের ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বা শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে বলে এদিন টুইটে আবেদন জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
এদিকে, বাপ্পাকে গ্রেফতারির প্রতিবাদে শনিবার সকালে পুলিশ কমিশনারের দফতরের সামনে ধর্নায় বসেন যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ–সহ অনেকে। সাংসদ–সহ প্রত্যেককে আটক করা হয়ে। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।