শেষ আটদিনের লড়াই। শনিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হল পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনায় আহত ছাত্র ঋষভ সিংয়ের।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পোলবার কামদেবপুরের কাছে নয়ানজুলিতে পড়ে যায় একটি পুলকার। সেই সময় গাড়িতে ছিল ১৫ জন পড়ুয়া। আহত হন কয়েকজন। গুরুতর জখম হয় চালক পবিত্র দাস-সহ পাঁচজন। এর মধ্যে ঋষভ সিং ও দিব্যাংশু ভগত গুরুতর আহত হয়। সেদিনই তাদের গ্রিন করিডর করে এসএসকেএমে নিয়ে আসা হয়। দু'জনের অবস্থা ছিল সংকটজনক।
আরও পড়ুন :'চেষ্টা করেছিলাম, তবে হেরে গেলাম', ঋষভের মৃত্যুর পর বললেন SSKM-এর সুপার
সেদিন থেকে ভেন্টিলেশনে ছিল ঋষভ। কিন্তু ক্রমশ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তার ফুসফুসে কাদা জল, পাঁক ঢুকে যাওয়ায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। ফুসফুস, লিভার ও কিডনিতে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ে। অক্সিজেনের মাত্রাও ওঠানামা করতে থাকে। রাত ১০টার অক্সিজেনের মাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে যায়। চিকিৎসকরা প্রাণপণ চেষ্টা করলেও অবস্থার উন্নতি হয়। বিকল হয়ে যায় বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাতের দিকে মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর হয়। তারপর মৃত্যু হয় ঋষভের।
মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন ঋষভের পরিজনরা। গত আটটা দিন ধরে ছেলের অপেক্ষায় ছিলেন ঋষভের বাবা সন্তোষ। ছেলে হারানোর খবর পাওয়ার পর থেকে অঝোরে কেঁদে চলেছেন তিনি। কথা বলার অবস্থায় নেই তিনি। তারমধ্যেই কিছুটা ঘোরের মধ্যে বলে যাচ্ছেন, 'আমার ছেলে যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক।'
এসএসকেএমের সুপার রঘুনাথ মিশ্র বলেন, 'আমরা চেষ্টা করেছিলাম। ওর কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা খুব বেশি ছিল। অক্সিজেনের মাত্রা অত্যন্ত কম ছিল। আমরা সবরকমের ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু আমরা হাসি ফোটাতে পারলাম না। বাচ্চাটাকে বাঁচাতে পারলাম না। আমরা চেষ্টা করেছিলাম। আমরা হেরে গেলাম।'
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ঋষভের দেহের ময়নাতদন্ত হবে। তারপর পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হবে। সেখান থেকে শ্রীরামপুরের বাড়িতে তার দেহ নিয়ে যাওয়া হবে।