তিন দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর বারুইপুরে একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তী খণ্ডিত দেহ। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও সূত্র খুঁজে পায়নি পুলিশ। কে বা কারা খুন করল সে বিষয়টি নিয়ে এখনও ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে পুলিশের অনুমান, খুনিরা স্থানীয় বাসিন্দা হতে পারে।
প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। তাঁর পাঁজরের নিচের অংশটি কেটে অন্য কোথাও ফেলে দেওয়া হয়েছে। কাঁধ থেকে তার দুটি হাত কেটে নেওয়া হয়েছে। শুধু পাঁজরের ওপরের অংশটি বারুইপুরের মল্লিকপুর রোডের ডিহি মদন মল্লর এলাকার ওই পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছিল। তাঁর মাথা একটি প্লাস্টিক দিয়ে মোরা ছিল। প্লাস্টিকের যে প্যাকেটটি পাওয়া গিয়েছে তা স্থানীয় কোনও বস্ত্র বিপণনির। ফলে তা দেখে পুলিশের অনুমান, স্থানীয় কোনও ব্যক্তিদের দ্বারাই ওই নৌসেনা কর্মীকে খুন করা হয়েছিল। তাছাড়া, এই খুনের ঘটনায় আরও বেশ কিছু তথ্য উঠে আসছে। তদন্তকারীদের অনুমান, সুঠাম চেহারার উজ্জ্বলকে কারও একার পক্ষে বাগে আনা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে এই খুনের ঘটনায় অনেকজনই জড়িত থাকতে পারে। পাশাপাশি এই খুনে সুপারি কিলার জড়িত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।
মঙ্গলবার থেকে নিখোঁজ থাকার পরেই থানায় ডায়েরি করেন তার স্ত্রী শ্যামলী ও ছেলে রাজু। তবে কেন খুন করা হল সে বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য জানতে পারেনি পুলিশ। উজ্জলের স্ত্রী এবং ছেলেকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।
সালেমপুরের বাসিন্দা উজ্জ্বল ১৫ বছর আগে নৌসেনার চাকরি থেকে অবসর নিয়েছিলেন। এরপরে বিভিন্ন সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীরা কাজও করেছেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তিনি মদে আসক্ত ছিলেন। প্রতিদিনই মদ্যপান করতেন। এমনকি মদ খাওয়ার পর এলাকার লোকেদের গালিগালাজ এবং তাঁদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তেন। তাঁর পরিবারের সঙ্গে স্থানীয়দের সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিল না। ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে মোবাইল ফেলে গিয়েছিলেন। সেই মোবাইলটি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় তার আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে, কর্মস্থলেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।