অবশেষে গ্রেফতার হলেন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। সন্দেশখালির এই নেতা গ্রেফতার হতেই আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এডিজি (দক্ষিণ) সুপ্রতিম সরকার। এর আগে ডিজিপি রাজীব কুমারের সঙ্গে সন্দেশখালি চষে বেড়িয়েছিলেন। এরপরও সেখানেই ঘাঁটি গেড়ে ছিলেন সুপ্রতিম সরকার। এলাকায় শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়েছিল পুলিশ। নিজেদের হাতে যাতে কেউ আইন না তুলে নেয়, এর জন্য স্থানীয়দের বার্তা দেওয়া হয়েছিল। তবে শাহজাহান অধরাই ছিলেন। এই আবহে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। তবে আজ শাহজাহানের গ্রেফতারির পর এই সব কিছু নিয়েই মুখ খুললেন এই উচ্চ পদস্থ পুলিশ আধিকারিক। (আরও পড়ুন: 'ভারতীয়ই নন', ট্রেকারের হেল্পার থেকে 'সন্দেশখালির বাঘ', কে এই শেখ শাহজাহান?)
আরও পড়ুন: এতদিনে নামল 'গলার কাঁটা', শাহজাহানের গ্রেফতারির 'ক্রেডিট' নিতে ঝাঁপ তৃণমূলের
আজ সংবাদমাধ্যমকে সুপ্রতিম সরকার জানান, মিনাখাঁ থানার বামনপুকুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল শাহজাহানকে। তবে এতদিন শাহজাহান কোথায় লুকিয়ে ছিলেন, এই প্রশ্নের জবাব 'তদন্তের স্বার্থে' দিতে চাননি এডিজি। এই বিষয়ে আদালতকেই সব জানানো হবে বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে তিনি আজ ইডিকে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সুপ্রমিতবাবু বলেন, 'শাহজাহানকে গ্রেফতারে আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল। আদালত স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর গত রাতে মিনাখাঁ থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আর রাজ্য পুলিশের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ইডি শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে উদ্যোগী হল না কেন?'
আরও পড়ুন: ধ্বংস হয় ১৯টি গির্জা… 'ওদের হাত রক্তে রাঙানো', পাকিস্তানকে 'ধুয়ে দিল' ভারত
এদিকে শাহজাহান কাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার বিষয়টি নিয়েও মুখ খোলেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ)। তিনি আজ বলেন, 'সংবাদমাধ্যমে লাগাতার বলা হয়েছে পুলিশ ইচ্ছাকৃত ভাবে শাহজাহানকে গ্রেফতার করছে না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা ঠিক নয়। এটা পুরোপুরি ভুল এবং এটা অপপ্রচার। এতদিন আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল। দু'দিন আগে মাননীয় হাই কোর্টের তরফ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়াহয়। আদালত জানায়, শাহজাহানের গ্রেফতারির উপরে কোনও বিধিনিষেধ নেই। তখনই আমরা জোরকদমে তল্লাশি শুরু করি। গত রাতে মিনাখাঁ থানার বামনপুকুর অঞ্চল থেকে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়।'
এদিকে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সরদারের এফআইআর-এর তারিখ নিয়ে যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে, তা নিয়েও মুখ খোলেন এডিজি। তিনি বলেন, 'এই ক্ষেত্রে তারিখ লেখায় ভুল হয়েছে। এই ভুল পুরোপুরি অনিচ্ছাকৃত। এর মধ্যে কোনও অসৎ উদ্দেশ্য বা অভিসন্ধি ছিল না। আমাদের দাবির সপক্ষে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশ মতো এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করবেন পুলিশ সুপার।' উল্লেখ্য, প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ককে গ্রেফতার করার বিষয়ে সন্দেশখালি থানার পুলিশকে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল। উল্লেখ্য, দেখা যায়, যেদিন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, তার একদিন আগেই এফআইআর হয় পুলিশের খাতায়। প্রশ্ন উঠেছিল, অভিযোগ দায়েরের আগের দিন কী ভাবে এফআইআর করা হল? তবে বিষয়টি ভুল করে হয়েছিল বলে দাবি করেন পুলিশ কর্তা। তবে তারিখ লেখায় ভুল হলেও নিয়ম মেনেই সব কিছু হয় বলে তাঁর দাবি।