ভারতীয় জনতা পার্টির আদর্শগত ‘পরামর্শদাতা’ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এবার বাংলার দার্জিলিং এবং কালিম্পং এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্য সিকিমে ইউনিট স্থাপন করতে চায়৷ পাহাড়ে এখনও সংগঠনটির কোনও উপস্থিতি নেই৷ শীর্ষস্থানীয় আরএসএস নেতারা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন যে এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে চার দিনের সাংগঠনিক বৈঠকে। নকশালবাড়িতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতও। উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে এই নকশালবাড়িতেই পুলিশ-কৃষকদের মধ্যে সংঘাত বেঁধেছিল। নকশালবাড়ির আন্দোলন সূত্রপাত এখান থেকেই। চিনের মাও জেদংয়ের অনুপ্রেরণায় এই সশস্ত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল। আজও ছত্তিশগড়, তেলাঙ্গানাসহ একাধিক রাজ্যে এই অতিবামপন্থী সশস্ত্র আন্দোলন জারি আছে।
এর আগে ২০১৭ সালে নকশালবাড়িতে এসে অমিত শাহ এক আদিবাসীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করেছিলেন। সেখান থেকেই উত্তরবঙ্গে বিজেপির শাখা বিস্তারের বীজ বপণ করেছিলেন শাহ। তবে অতি ডানপন্থী সংগঠন হিসেবে পরিচিত আরএসএস-এর প্রধান এই প্রথম নকশালবাড়িতে পা রাখল। বাংলায় আরএসএস-এর প্রায় ১৮০০ শাখা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪৫০টি উত্তরবঙ্গের জেলায়। যদিও এই ৪৫০ শাখার মধ্যে প্রায় ১০০টি শাখা বন্ধ হয়েছে বিগত দিনে। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস বামফ্রন্ট সরকারকে উৎখাত করার পরেই রাজ্যে বেশিরভাগ শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
বাংলা যখন পুরভোট নিয়ে ব্যস্ত ছিল, সেই সময় ভাগবত এসেছিলেন বাংলায়। মোহন ভাগবত ১০ ফেব্রুয়ারি হায়দরাবাদ থেকে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। এরপর তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নকশালবাড়িতে ছিলেন এবং সারদা আরএসএস পরিচালিত বিদ্যা মন্দির স্কুলে কর্মী ও পদাধিকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য পেশ করেন। ভাগবত এরপর ১৭ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমান জেলা এবং কলকাতায় সভা করে ট্রেনে করে বাংলা ছাড়েন। আরএসএস সম্প্রতি বাংলাকে তিনটি সাংগঠনিক অঞ্চলে বিভক্ত করেছে। রাজ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া শাখাগুলিকে জলদি খোলার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন মোহন ভাগবত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আরএসএস নেতা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, ‘সাংগনিক বৈঠকে আলোচনার সময় আমরা উপলব্ধি করি যে দার্জিলিং, কালিম্পং বা সিকিমে কোনও শাখা নেই। সেই সময় ভাগতব বলেন যে স্থানীয়দের সংঘের সঙ্গে যুক্ত করে সেখানে যাতে নতুন শাখা খোলা হয়।’