হাতের শিরা কেটে বাবা, মা ও বোনকে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা পেশায় গৃহশিক্ষক এক যুবকের। সেই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে হুগলির ধনিয়াখালি থানার দশঘরার রায়পাড়ায়।
জানা গিয়েছে পাড়ায় বিজ্ঞানের গৃহশিক্ষক হিসেবে বেশ নাম ছিল প্রমথেশ ঘোষালের। তবে কয়েকদিন আগে তাঁর করোনা হলে একমাত্র আয়ের পথ বন্ধ হয়। এদিকে প্রমথেশ দীর্ঘদিন ধরে সিরোসিস অফ লিভার রোগে আক্রান্ত ছিল। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও শরীর ভালো ছিল না। বাবা অসীম ঘোষাল (৬৮) ও মা শুভ্রা ঘোষালের (৬০) ওষুধের জন্য মাসে প্রচুর খরচ হত। এদিকে বিবাহিত বোন পল্লবী চট্টোপাধ্যায়ের (৩৮) স্বামী বেকার হওয়ায় তার পরিবারও টানতে হল প্রমথেশকেই। ভাইফোঁটার জন্য বোন পল্লবী বাড়ি এসেছিলেন।
প্রাথমিক ধারণা মানসিক অবসাদের থেকেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে প্রমথেশ। পাড়ার লোকজন এই ঘটনা মেনে নিতে পারছে না। বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে এলাকায় বেশ নাম ছিল প্রমথেশের। দশঘরার রায়পাড়ায় দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে বসবাস করছিলেন ঘোষাল পরিবারের সদস্যরা। তবে অভাবেক সংসার আর হয়ত একা টেনে নিয়ে যেতে পারছিলেন না প্রমথেশ। তাই বাবা, মা, বোনকে খুন করে নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে সে। প্রমথেশকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ধনিয়াখালি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ধনিয়াখালি থানার পুলিশ গিয়ে এদিন সকালে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, নিজের এবং বৃদ্ধ বাবা-মার চিকিৎসার খরচ জোগাতে পারছিলেন না প্রমথেশ। পল্লবীর শ্বশুরবাড়িতেও কোনও সমস্যা ছিল। একদিকে আর্থিক অনটন, অন্যদিকে মানসিক অবসাদ থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে সে।