সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। সেক্ষেত্রে শাসক দলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় চোপড়ার ঘটনাকে হাতিয়ার করে আন্দোলন গড়তে চাইছে তৃণমূল। চোপড়ায় ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তে হাইড্রেন তৈরির জন্য বিএসএফের কাটা মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ শিশুর। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে এবার ক্রমেই সুর ছড়াচ্ছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল তৈরি করেছে শাসক দল। সেই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা মন্ত্রীরা। এই ঘটনার জন্য বিএসএফের অসাবধানতাকে দায়ী করে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: হাই ড্রেনের জন্য মাটি খুঁড়ে ছিল বিএসএফ, ধস নেমে চাপা পড়ে মৃত্যু হল ৪ শিশুর
জানা গিয়েছে, ১২ সদস্যের এই প্রতিনিধি দল শিশুমৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে জরির ভিত্তিতে দেখা করতে চেয়েছে। ইতিমধ্যেই তারা এই বিষয়ে রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানিয়েছে। তবে এই মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন রাজ্যপাল। তিনি কলকাতায় ফেরার পরেই তৃণমূলের প্রতিনিধি দল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারে বলে খবর। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি দেখা করতে সম্মত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তৃণমূলের তরফে রাজ্যপালকে আবেদনে জানানো হয়েছে, ‘যেমন কেরলের ভ্রমণ সংক্ষিপ্ত করে আপনি সন্দেশখালি এসেছিলেন, ঠিক সেরকমই সমান গুরুত্ব দিয়ে চোপড়া পরিদর্শন করুন।’ এদিকে, শিশু মৃত্যুতে আজ চোপড়ার দাসপাড়া ব্লকে বিএসএফ ক্যাম্পের সামনে মৌন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে তৃণমূল।
জানা গিয়েছে, তৃণমূলের ১২ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলের মধ্যে রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস, শশী পাঁজা, ব্রাত্য বসু, উদয়ন গুহ এবং কুণাল ঘোষের মতো নেতা-মন্ত্রীরা। এছাড়াও রয়েছেন, সাংসদ দোলা সেন, প্রতিমা মণ্ডল প্রমুখ। শিশু মৃত্যুর ঘটনার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিএসএফের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘটনায় তারা প্রকৃত তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, যেহেতু বিএসএফ সেখানে হাইড্রেনের কাজ করছিল তাই এই ঘটনার জন্য বিএসএফ’ই হল দায়ী।
উল্লেখ্য, সোমবার এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে চোপড়ার দাসপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চেতনাগছ এলাকায়। ওই এলাকায় এর আগেও ড্রেন ছিল। তবে সেই ড্রেন খুঁড়ে আরও গভীর করা হচ্ছিল। বিএসএফের নির্দেশে জেসিবির সাহায্যে সেই কাজ করা হচ্ছিল। তখনই সেখানে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি বিএসএফের জওয়ানরা তাদের উদ্ধার করে চোপড়ার দলুয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ড্রেন গভীর করার জন্য জেসিবি দিয়ে মাটি খুঁড়ে ট্রাক্টরে করে তা তুলে অন্য জায়গায় চাপা দিয়ে রাখা হচ্ছিল। ওই শিশুরা সেই মাটির স্তুপে খেলতে গিয়েই চাপা পড়ে মারা যায়। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিএসএফ। তাদের বক্তব্য, গ্রামবাসীরাই মাটি জমা করে রেখেছিলেন।