আজ, কোচবিহারে জনসভা করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে সম্প্রতি বিএসএফের গুলিতে নিরীহ মানুষজনের মৃত্যু হয়েছিল। এবার সেটা নিয়েই কেন্দ্রকে আক্রমণ করলেন এবং নিজের ভিন্ন রূপ দেখালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিএসএফের গুলিতে নিহত হন যুবক প্রেমকুমার বর্মণ। এদিন তাঁর পরিবারকে তুলে আনলেন মাথাভাঙার মঞ্চে। কান্নায় ভেঙে পড়া তাঁর মায়ের চোখের জল নিজের রুমাল দিয়ে মুছিয়ে দিলেন। এই মানবিক অভিষেককে দেখে আপ্লুত মানুষজন।
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন এখন দুয়ারে। তাই জমি শক্ত করতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। শনিবার কোচবিহারের মাথাভাঙায় জনসভা করেন। তার আগে পঞ্চানন বর্মাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অভিষেক। এরপর বিএসএফের গুলিতে নিহত যুবক প্রেমকুমার বর্মণের বাবা, দাদাকে সভামঞ্চ থেকেই অভিষেক কথা দিলেন – ‘এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য়ে কে? তার শেষ দেখে ছাড়ব।’ আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে হুঁশিয়ারি দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চাইলেন তিনি। আর এখান থেকেই বলেন, ‘কোচবিহারের একজন যুবক–যুবতী বলুক যাঁদের কেন্দ্রীয় সরকার চাকরির নিয়োগ হাতে তুলে দিয়েছে। আমরা দলের আবর্জনা বের করে দিয়েছি। কারণ আমরা বিশ্বাস করি দুষ্টু গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভাল। আর বিজেপি ওনাকে সাংসদ করে পাঠিয়েছে। কেউ যদি বলেন আমি অভিষেকের লোক। তাঁকে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন করবেন। কেউ আমার লোক নয়। একমাত্র সাধারণ মানুষ আমার লোক।’
এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। একইসঙ্গে নাম না করে নিশীথ প্রামাণিককেও একহাত নেন। অভিষেক বলেন, ‘আচ্ছে দিনের নমুনা কী? রান্নার গ্যাস ১১০০ টাকা, পেট্রোল ১০০ টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি আমাদের গ্রাস করেছে এই নমুনা। বাংলা আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। যাদের পাকা বাড়ি ছিল তাদের ঘর বাতিল করা হয়েছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়েই লড়াই করতে হবে।’
অন্যদিকে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য নিয়ে সুর সপ্তমে তোলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘এক মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ সকলে এসে বলুক তাঁরা আলাদা রাজ্য চায়। আমি এরপর থেকে আর মুখ দেখাব না। আমাদের ভাঁওতাবাজির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। আলাদা রাজ্য? একটা ২৪ বছরের যুবককে গুলি করে মারা হল। মানুষের ভুল হয়। ভুল হলে স্বীকার করুক। এর অবশ্যই শেষ দেখে ছাড়ব। বিজেপি কথায় কথায় রাজবংশীদের কথা বলে। একবার কি বিজেপি নেতারা যেতে পারলেন না এদের বাড়িতে? পরিবারের পক্ষ থেকে এফআইআর করা হয়েছে। কলকাতা গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। আজ থেকে কোচবিহারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে যাচ্ছি।’