রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাঝেমধ্যেই রেলসফর করতেন। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসার পরে তাঁকে বিশেষ রেলসফর করতে দেখা যেত না। তবে বুধবার সেই মমতাকেই দেখা গেল সরাইঘাট এক্সপ্রেসে চড়ে মালদায় যেতে। হেলিকপ্টারে নয়, মমতা ট্রেনে চড়ে মালদায় যাচ্ছেন এই খবর একেবারে অন্যরকম বার্তা দেয় তৃণমূলের অন্দরে।
এদিন বর্ধমান স্টেশনে সরাইঘাট এক্সপ্রেস দাঁড়াতেই নেতা কর্মীদের একেবারে উপচে ওঠা ভিড়। ট্রেনের দরজায় দাঁড়ালেন মমতা। হাত নাড়লেন। মুখে আলতো হাসি। সেই হাসি মন ছুঁয়ে গেল নেতা কর্মীদের মনেও। এদিকে প্রিয় দিদির জন্য় স্টেশনেই মিহিদানা এনেছিলেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস। কিন্তু তিনি কি মিহিদানা দিতে পারলেন?
এদিন সরাইঘাট স্টেশনে ট্রেন ঢোকার আগে এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্মে ট্রেন থেমেছিল। তবে তার আগেই ২ ও ৩ নম্বর প্লাটফর্মে মাছি গলার উপায় ছিল না। কঠোর নিরাপত্তা।
ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন তাবড় নেতা কর্মীরা। ট্রেন থামতেই সকলেই একবার ছবি তুলতে ব্যস্ত। এদিকে নেত্রীর জন্য ফুল, মিহিদানা, সীতাভোগ নিয়ে গিয়েছিলেন বিধায়ক খোকন দাস। বর্ধমানের উপর দিয়ে ট্রেন যাবে আর স্পেশাল সীতাভোগ মিহিদানা নেত্রীর হাতে দেওয়া যাবে না একী হয়? ভিড় ঠেলে এগিয়েও গিয়েছিলেন খোকন। কিন্তু সুরক্ষার ঠেলায় সব পরিকল্পনায় জল পড়ে গেল। সূত্রের খবর, হাতেই পড়ে থাকল মিহিদানা, সীতাভোগ। বেরিয়ে গেল ট্রেন। খোকন দাস বলেন, ফুলের স্তবকটা দিয়েছি। তবে তখনও দিদির কথাটা মনে ভাসছে, সবাই একসঙ্গে কাজ করুন। উন্নয়নের কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে চলুন। সকলে যাতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে সেজন্যই তো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নবজোয়ার। আর সেই নবজোয়ারে অংশ নিতেই মালদায় যাচ্ছেন মমতা।
তবে এদিন বিধায়ক খোকন দাসের এই মিহিদানা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে ঘিরে অনেকের মনে পড়ে যাচ্ছে সেই ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ঘটনা। শতাব্দীতে চেপে মালদায় যাচ্ছিলেন মমতা। সেদিন বোলপুর স্টেশনে কেষ্ট মণ্ডলের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মমতা। সেই সময় দিদির হাতে চপ মুড়ি তুলে দিয়েছিলেন কেষ্ট মণ্ডল। কিন্তু সেই দিন আর নেই। বর্তমানে কেষ্ট মণ্ডল তিহাড় জেলে। তাঁর পক্ষে নেত্রীর জন্য় বোলপুর স্টেশনে দাঁড়ানো আর সম্ভব নয়। তবে বর্ধমান স্টেশনে যেন অনেকটাই সেই ছবির পুনরাবৃ্ত্তি হল। তবে এদিন স্টেশনে কি কেষ্ট মণ্ডলের অভাব অনুভব করলেন তৃণমূলের তাবড় নেতৃত্ব?