অসমের শিলচরে ডলু চা বাগানে বিমানবন্দর তৈরির কাজ করছে সরকার। তবে সেক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই এই কাজ করছে সরকার। এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছিল। সেই সংক্রান্ত মামলায় পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকায় বিমানবন্দর তৈরির কাজের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে সেখানে বিমানবন্দর তৈরির কাজ করা যাবে না। একইসঙ্গে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া কীভাবে এই প্রকল্পের কাজ চলছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি পরিবেশ আদালতের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: ভোটের দিন বন্ধ চা বাগানে জমিয়ে মাংস ভাত খাওয়ালেন তৃণমূল নেতা, মেনুতে আর কী কী?
পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া ডলু চা বাগানে বিমানবন্দর তৈরির কাজ চালানোর অভিযোগ জানিয়ে প্রথমে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা হয়েছিল। কিন্তু, সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ। তারপরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারীরা। সেই সংক্রান্ত মামলায় পরিবেশ আদালতের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালতের ৩ বিচারপতির বেঞ্চ।
সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, এই কাজের জন্য ২০০৬ সালের এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট নোটিফিকেশন অনুযায়ী পরিবেশগত ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু, এই বিমানবন্দর তৈরির ক্ষেত্রে সেরকম কোনও ছাড়পত্র নেই। বেঞ্চের আরও মন্তব্য, জাতীয় পরিবেশ আদালত নিজের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
মামলাকারীদের অভিযোগ, অন্যতম নামকরা এই ডলু চা বাগানের ৪১ লক্ষ চা গাছ ধ্বংস করে বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। সেক্ষেত্রে ভারত সরকার এবং অসম সরকারের পক্ষে সওয়াল করেন সলিসেটের জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বক্তব্য, যারা মামলা করেছেন তারা ১৩০০ কিমি দূরের বাসিন্দা। তাঁর আরও যুক্তি, চা বাগানে কর্মরত শ্রমিকরাও বিভিন্ন সময়ে বাড়ির কাজের জন্য গাছ কাটেন। সেখানে বিমানবন্দর তৈরির কারণ হিসেবে একাধিক যুক্তিও আদালতের সামনে পেশ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এই মামলায় আগে রিপোর্ট দিয়েছিল ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির সচিব। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। চা গাছ উপড়ে ফেলা হচ্ছে। মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী দাবি করেন, অনেক বড় বড় গাছও চা বাগানে রয়েছে। সেগুলিও কাটা হচ্ছে। এর ফলে যেমন পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে তেমনি চা বাগানে কর্মরত কয়েক হাজার শ্রমিকের কাজ এবং ঘরবাড়ি হারানোর আশঙ্কা থাকছে। এতে সামাজিক প্রভাব পড়তে পারে। এরপরে সুপ্রিম কোর্ট ডলু চা বাগানে স্থিতাবস্থা জারি করে।