বিয়ের খরচা কে দেবে? তাই নিয়ে বচসা বধূর শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে বাপের বাড়ির লোকেদের। যার জেরে আত্মঘাতী হওয়া গৃহবধূর দেহ কোনও পরিবারই নিল না। ২৪ ঘণ্টা ধরে মর্গের বাইরেই পড়ে থাকল মৃতদেহ। অবশেষে পুলিশের তৎপরতায় সৎকার হল গৃহবধূর মৃতদেহ। গৃহবধূর বাবা এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের এমন কীর্তি দেখে কার্যত চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। ঘটনাটি বর্ধমানের কালনা থানা এলাকায় ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, এক সপ্তাহ আগে বিয়ে হয়েছিল ওই নববধূ লক্ষ্মী টুডুর। তিনি মেদগাছি গ্রামের বাসিন্দা। তার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কালনার বাদলা কুলুপুকুর গ্রামের বাসিন্দা সনজিৎ টুডুর সঙ্গে। কিন্তু, সেই বিয়েতে সন্তুষ্ট ছিলেন না গৃহবধূ। এরপর কেরোসিন তেল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই গৃহবধূ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় কালনা মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেও তাকে শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। রবিবার তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নববধূর পরিবারের পক্ষ থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হলেও তারা কার্যত দেহ নিতে অস্বীকার করেন তারা।
কিছুদিন আগেই বিয়েকে কেন্দ্র করে যে পরিমাণ খরচা হয়েছে তা নিয়েই মাথাব্যথা দেখা যায় তার পরিবারের লোকেদের। অনেক ধারদেনা করে লোকের বিয়ে দেওয়ার ফলে সেই টাকা শ্বশুরবাড়ির লোকেরা দেবে নাকি বাপের বাড়ির লোকেরা দেবে তাই নিয়ে মর্গের বাইরে চলে দু'পক্ষের তুমুল ঝামেলা। রবিবার ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পরেও দু'পক্ষের ঝামেলার ফলে তারা মর্গের বাইরেই দেহ ফেলে রেখে যে যার বাড়ি চলে যায়। ২৪ ঘণ্টা পরেও কোন পক্ষ দেহ নিতে না আসায় রাতভর পাহারা দিতে হয় পুলিশকে। অবশেষে সৎকার নিয়ে তৎপর হয় পুলিশ। তারা দেহ সৎকারের জন্য দু-পক্ষকেই অনুরোধ জানায়। অবশেষে পুলিশের অনুরোধে সাড়া দিয়ে লক্ষীর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের পক্ষ থেকে দেহ সৎকারের দায়িত্ব নেওয়া হয়। অবশ্য সৎকারের সময় গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকেরাও উপস্থিত ছিলেন।