স্বামীর অবর্তমানে পরকীয়ায় মজে ছিলেন গৃহবধূ। সেই অভিযোগে গৃহবধূ এবং তাঁর পুরুষ সঙ্গীকে একসঙ্গে বাড়ির পিলারে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হল। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা কাকদ্বীপের নারায়ণপুরে ঘটেছে। অনেকেই সেই মারধরের ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করেছেন। তা দেখতে ভিড় জমে স্থানীয়দের। কার্যত এই ঘটনায় স্থানীয়রা কোনও প্রতিবাদ জানাননি। ঘটনায় স্থানীয়দের একাংশের বিরুদ্ধেই মারধরের অভিযোগ তুলেছেন ওই মহিলা।
আরও পড়ুন: বধূর সঙ্গে পরকীয়ায় মত্ত অবস্থায় ধরা পড়লেন তৃণমূল নেতা, রাতভর বেঁধে পেটাল জনতা
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। ফলে তিনি বাড়িতে একাই থাকতেন। সেই সূত্রে গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় ওই মহিলার। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্বামীর অবর্তমানে ওই যুবক প্রায়ই মহিলার ঘরে ঢুকতেন। বেশ কয়েক মাস ধরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। তবে তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হতে দেরি হয়নি। ওই যুবকের নিয়মিত মহিলার বাড়িতে যাতায়াত চোখে পড়ে স্থানীয়দের। এরপরে মহিলা সঙ্গে যুবকের সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ হয় গ্রামবাসীদের। তাঁদের অভিযোগ, বেশ কয়েক মাস ধরেই মহিলার ঘরে নিয়মিত যেতেন ওই যুবক। এর ফলে গ্রামের সভ্য পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। বুধবার ভোর রাতে ঘরের ভিতর এই মহিলার সঙ্গে যুবককে অশালীন অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা মহিলা এবং যুবককে বাড়ির সামনে পিলারে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন। খবর পেয়ে কাকদ্বীপ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মহিলা এবং তাঁর সঙ্গীকে উদ্ধার করে। নিগৃহীত মহিলার অভিযোগ, গ্রামবাসীদের অনেকেই তাঁকে মারধর করেছেন। বাড়ির লোক তাঁকে মারধর করেননি। ওই যুবক প্রয়োজনীয় কাজের জন্যই ঘরে ঢুকেছিল বলে দাবি মহিলার। তাঁর আরও দাবি, গ্রামবাসীরা বিষয়টিকে ভুলভাবে নিয়েছেন।
যদিও এরকম ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক জায়গাতে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে মালদহের দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনার পরেই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকের মতে, দুজন সাবালক যদি স্বেচ্ছায় সম্পর্কে জড়ায় তাহলে সে ক্ষেত্রে গ্রামবাসীরা তাদের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। প্রসঙ্গত, মালদহের ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছে বিজেপি। আর কাকদ্বীপের ঘটনায় থানায় না গিয়ে গ্রামবাসীরা যেভাবে নিজেদের হাতে আইন তুলে নিয়েছেন তাতে গ্রামবাসীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।