থানা থেকে ফোন আসার পরেই আত্মঘাতী হলেন এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়া থানার অন্তর্গত কুমারডিহা গ্রামে। মৃত যুবকের নাম সুরোজ বাউড়ি (২৩)। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। বাড়ি থেকে ৪০০ মিটার দূরে একটি গাছ থেকে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে কী কারণে যুবক আত্মহত্যা করেছে, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশের ফোন আসার পরেই কেন যুবক এই কাণ্ড করল, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। যদিও পরিবারের দাবি, থানা থেকে হুমকি পেয়ে ভয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁদের ছেলে। সেই খবর পাওয়ার পরেই শনিবার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিবারের সদস্যরা দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান।
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের স্টুডিয়োতে আত্মহত্যা যোধা আকবর, দেবদাসের আর্ট ডিরেক্টর নীতীন দেশাইয়ের
পরিবারিক সুত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ জামুড়িয়া থানা থেকে একটি ফোন আসে। সেইসময় সুরোজ খাচ্ছিলেন। ফোন পাওয়ার পড়ে তিনি খাবার না খেয়েই উঠে যান। তারপর থেকেই তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার ফোনও বন্ধ ছিল। তাকে খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়নি। ফোন বন্ধ অবস্থায় বিছানাতেই পড়েছিল। পরিবারের সদস্যরা তাঁর ফোন চালু করে শেষ নম্বরে ফোন করে জানতে পারেন যে সেই ফোন জামুড়িয়া থানা থেকে করা হয়েছিল। এর পরেই আজ শনিবার সকালে বাড়ি থেকে ৪০০ মিটার দূরে একটি গাছে যুবককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষ। যে পুলিশ তাঁকে ফোন করেছিলেন সেই পুলিশ কর্মীকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য দাবি জানান তাঁরা। এমনকী ফোনে যুবককে কী বলা হয়েছিল যে যুবককে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হল? সে কারণটি জানতে চান স্থানীয়রা। প্রায় ঘণ্টাচারেক বিক্ষোভের পর পুলিশ পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামেরই এক মেয়ে ও তাঁর দাদু ওই যুবকের নাম থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য থানা থেকে ওই যুবককে ফোন করে ডাকা হয়েছিল। তবে ওই মেয়ে ও তার দাদু কী বিষয়ে অভিযোগ করেছেন, তা এখনও জানা যায়নি।
এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন মৃত যুবকের বাবা গণেশ বাউড়ি। তিনি জানান, রাত ১২টার দিকে ছেলের মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখে তিনি জানতে পারেন জামুড়িয়া থানা থেকে শেষ ফোন এসেছিল। তারপরেই ছেলে আত্মঘাতী হয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনও বিষয় নিয়ে পুলিশ তাঁকে হুমকি দিয়ে থাকতে পারে বলে তাঁর অভিযোগ। যদিও কী বিষয়ে হুমকি তা নিয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারেননি তিনি। বাপি বাউড়ি নামে স্থানীয় এক যুবক জানান, শনিবার সকালে সুরোজের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। কারণ হিসেবে তাঁর দাবি, একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সুরোজের। মেয়ের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এরপর সম্ভবত তাঁকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সেই কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক।
(হেল্পলাইন নম্বর: ওয়ালাইফ ফাউন্ডেশন - ৭৮৯৩০৭৮৯৩০)