মর্মান্তিক। অপ্রিয় সত্য। কঠিন বাস্তব। এমনই ঘটনা ঘটল রাজ্যে। যুবকের বিয়ে হয়েছিল বৃহস্পতিবার। রঙিন হয়ে উঠেছিল গোটা বাড়ি থেকে যুবকের জীবন। আর তাই নিয়ে শুক্রবার বাড়িতে চলছিল বৌভাতের প্রস্তুতি। কিন্তু হঠাৎই ধপ করে যেন সেই রঙিন আলোর রোশনাই নিভে গেল। কারণ বৌভাতের দিনই পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সদ্য বিবাহিত যুবকের। নদিয়ার রানাঘাটের গাংনাপুর থানার এরুলি এলাকায় সদানন্দ সর্দারের (২৫) মর্মান্তিক পরিণতি কেউ মেনে নিতে পারছেন না।
ঠিক কী ঘটেছে রানাঘাটে? স্থানীয় সূত্রে খবর, বাড়িতে তখন সানাই বাজছিল। বিয়েবাড়িতে ভর্তি লোকজন। বৌভাতের এলাহি আয়োজনের গন্ধ বাতাসে মিশেছে। নবদম্পতির জীবন শুরু হতে চলেছে। আর কিছুক্ষণ পরেই ফুলশয্যার মাহেন্দ্রক্ষণ নেমে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে যাবে তা কল্পনার অতীত ছিল। ফুলশয্যার উপহার কিনতে গিয়েছিলেন সদ্য বিবাহিত যুবক সদানন্দ। কিন্তু আর সেটা কিনে ফেরা হল না। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তাঁর। হাসপাতালের চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। অধরা রইল ফুলশয্যার মিলন। এখনও শোকস্তব্ধ গোটা গাংনাপুর।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার এলাকার বাজারে বৌভাতের বাজার করতে গিয়েছিলেন সদানন্দ সর্দার। কিন্তু তাঁর যাওয়ার পথে মোটরবাইকের সামনে একটি শেয়াল চলে আসে। সেটা কাটিয়ে বেরতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে সদানন্দের মোটরবাইক। আর সোজা গিয়ে একটি বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মারে। তারপরই তিনি ছিটকে পড়েন মাঝরাস্তায়। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় সদানন্দকে উদ্ধার করে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? পরিবার সূত্রে খবর, এই যুবক সদানন্দ কলকাতার দমদমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করতেন। ভালবেসে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন গ্রামের মেয়েটিকে। আয়োজনও হয়েছিল সব। কিন্তু উপহার কিনে ভালবাসার সেই মানুষটির কাছে ফিরে আসতে পারলেন না। মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিল যুবক সদানন্দের। গোটা পরিবারের সবাই এখন বাক্রুদ্ধ। জ্ঞান হারিয়েছেন নববধূ। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।