জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ডে রেলকে প্রতারণার অভিযোগে ধৃত অমৃতাভ চৌধুরীর বাড়িতে এবার হানা দিল সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সেইসঙ্গে বাড়ির মালিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রবিবার নিজাম প্যালেসে অমৃতাভকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এদিন নিজাম প্যালেস থেকে বেরোনোর মুখে সাংবাদিকদের অমৃতাভ জানান, ‘আমি অমৃতাভ। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। রেলের আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করুন।’
এদিন অমৃতাভকে নিয়ে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা আসেন তাঁর জোড়াবাগানের বাড়িতে। সেখান থেকে বেশ কিছু নথিপত্র ও ছবি সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনা কাণ্ডের সময়ে বেশ কিছু ছবি ও নথিও রয়েছে। জোড়াবাগানের বাড়ি থেকে ফের অমৃতাভকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন সিবিআই আধিকারিকরা। অমৃতাভ জানিয়েছেন, রেল দুর্ঘটনার সময়ে ক্ষতিপূরণ-সহ তিনি যত টাকা পেয়েছিলেন, তা তিনি সুদ-সহ ফিরিয়ে দেবেন। তাঁর দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে রেলের অনেকে জড়িত। সিবিআই সূত্রে খবর, অমৃতাভের ডিএনএ–এর নকল রিপোর্ট জমা দিয়ে প্রতারণা অভিযোগ উঠেছে। জ্ঞানেশ্বরীর মৃতের তালিকায় অমৃতাভের নাম ছিল। এই কারণে তাঁর পরিবার ৪ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছিল। অমৃতাভের বোনকেও চাকরি দেওয়া হয়। গত ১ দশক ধরে শিয়ালদহ ডিভিশনের সিগনালিং বিভাগে কর্মরত সে। সম্প্রতি দক্ষিণ পূর্ব রেলের ভিজিল্যান্স বিভাগের কাছে এই ব্যাপারে অভিযোগ জমা পড়ে। জানা যায়, জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ডে মৃতের তালিকায় থাকা অমৃতাভ তাঁর পাসপোর্ট পুনর্নবীকরণ করেছেন। প্যান-সহ আয়কর জমাও দিয়েছেন। খোঁজ নিতে গিয়ে তদন্তকারীরা দেখেন, অমৃতাভ একটি বেসরকারি সংস্থায় দিব্যি চাকরি করছেন। তারপরে সেই সংস্থায় হানা দেয় তদন্তকারীরা। কিন্তু রেলের দাবি, অমৃতাভ তদন্তকারীদের চোখ এড়িয়ে পালিয়ে যান।
এরপরই সিবিআইযের কাছে রেলের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে অমৃতাভ ও তার বাবাকে আটক করা হয়। সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়, অমৃতাভের বাবা এই ভুয়ো তথ্য দেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ডে দুর্ঘটনায় ১৫০ জনের বেশি যাত্রীর মৃত্যু হয়। সেই মৃতের তালিকায় ছিলেন এই অমৃতাভ চৌধুরী।