বঙ্গ বিজেপির নেতাদের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। ‘সবকিছু ঠিক’ আছে। এমনই দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। একইসঙ্গে গোষ্ঠীকোন্দলের যাবতীয় 'জল্পনা' উড়িয়ে দিতে আবার নিজের প্রবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চক্রান্ত’ তত্ত্বের শরণাপন্ন হলেন তিনি।
সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপ বলেন, ‘যারা নিজেদের দল সামলাতে পারছে না, তারাই বিজেপির সম্পর্কে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। বিজেপিতে কোনও বিভেদ নেই, ভুল বোঝাবুঝি নেই।’
রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, মুখে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ নেই বলেও বঙ্গ বিজেপির ‘গোষ্ঠীকোন্দল’ নিয়ে যে যথেষ্ট চাপে পড়েছেন, তা সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে সাফাই গেয়ে আরও স্পষ্ট করে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। বিশেষত গত শুক্রবার দিল্লিতে অমিত শাহের দরবারে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর ‘স্নেহভাজন’ রাজ্যের এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে নালিশ ঠোকার পর সেই ‘সাফাই’ আরও তাৎপর্য পেয়েছে।
বিজেপি সূত্রে খবর, ওই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছাড়াও রাজ্যসভার এক সাংসদ, দক্ষিণবঙ্গের এক সাংসদ এবং লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল থেকে আসা এক সাংসদ ছিলেন। যিনি আবার কোনও রাখঢাক না করে দিল্লিতে দিলীপ এবং রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘ক্ষোভ’ প্রকাশ করেছিলেন। বিজেপির একাংশের মতো তিনিও অভিযোগ করেছিলেন, ‘কাজের লোকেদের’ নিস্ক্রিয় করে ‘কাছের লোকেদের’ সংগঠনে জায়গা করে দিচ্ছেন দিলীপ-সুব্রত জুটি। তারপরই দিলীপের সেই 'সাফাই' ঘিরে রাজনৈতিক মহলে নয়া জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন, তাহলে কি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকেই দিলীপকে কোনও ‘বার্তা’ দেওয়া হয়েছে?
দিলীপ অবশ্য জানিয়েছেন, যে রিপোর্ট নিয়ে তাঁর সঙ্গে মুকুলের ‘বাদানুবাদ’ হয়েছে বলে ‘জল্পনা’ ছড়িয়েছে, সেরকম কোনও রিপোর্টই নাকি পেশই করা হয়নি। এমনকী আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ‘মধুর’ বলে দাবি করেন দিলীপ। ‘সব ঠিক আছে’ তত্ত্বে জোর দিয়ে দিলীপ জানান, বাবুল তাঁকে জন্মদিনে ফোন করেছিলেন। এমনকী দলের অন্দরের কোন্দলের খবর নিয়ে তাঁরা হাসিঠাট্টা করেছেন।
কিন্তু ‘সবকিছু ঠিক থাকলে’ কেন এরকম খবর ছাড়বে? মমতার 'চক্রান্ত' তত্ত্বের শরণাপন্ন হয়ে দিলীপ সাফাই দেন, ‘এরকম খবর তৈরি করে বিজেপির সুনাম নষ্ট করার জন্য এরকম করা হচ্ছে। বিজেপির প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করতে, বিজেপি কর্মীদের মনোবল নষ্ট করতে এই কাজ করা হচ্ছে।’