পাঁচ মাস কাটতে না কাটতে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেতন বন্ধের হুঁশিয়ারিতে সম্ভবত শিক্ষা হয়নি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি গৌতম পালের। ফের একবার একই রকম অভিযোগে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসের ভর্ৎসনার মুখে তিনি। গত বার ২ সপ্তাহ সময় দিয়েছিলেন বিচারপতি। এবার দিলেন ৪ ঘণ্টা। শুক্রবার বেলা ৩টে ২০ মিনিটের মধ্যে আদালতের নির্দেশ পালন করা না হলে গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে দায়ের হবে আদালত অবমাননার মামলা।
পল্লব বারিক নামে এক চাকরিপ্রার্থী ২০১৪ সালে প্রাথমিক টেটে বসেছিলেন। তাঁর আইনজীবী দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় জানান, প্রথমে পল্লববাবুকে জানানো হয় তিনি টেট পাশ করতে পারেননি। পরে জানা যায় পল্লববাবু ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়ে টেট পাশ করেছে। এর পর চাকরির দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। আদালত তাঁকে ইন্টারভিউতে বসতে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেয়।
শুক্রবার আদালতে মামলাটি উঠলে মামলাকারীর আইনজীবী জানান, ২ মাস কাটলেও ওই প্রার্থীকে ইন্টারভিউতে বসতে দেওয়া হয়নি। একথা শুনে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা করেই কি আদালতের নির্দেশ কার্যকর করেনি পর্ষদ। ৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে হবে পর্ষদকে। পল্লববাবুর ইন্টারভিউর ব্যবস্থা করতে হবে তাদের। নইলে পর্ষদ সভাপতির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে।’
বলে রাখি, গত ১৭ জুলাই একই রকম ঘটনা ঘটেছিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ পালন করেনি পর্ষদ। আদালতকে তারা জানায়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় ডিভিশন বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চে মামলার কোনও নম্বর বলতে পারেননি পর্ষদের আইনজীবী। এর জেরে সেই দিনই আদালতে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালকে আদালতে তলব করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। গৌতমবাবু আদালতে হাজিরা দিলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি আপনার বেতন বন্ধ করে দিচ্ছি। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।’ শুনে আদালতেই কার্যত ভেঙে পড়েন গৌতমবাবু। বিচারপতিকে অনেক কাকুতি মিনতি করে সেবারের মতো নিষ্কৃতি পান তিনি। ফের একই অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। এবার আদালত অবমাননার মামলার মুখে তিনি।