শনিবারের পুনরাবৃত্তি হল রবিবার। দমদমে নন-ইন্টারলকিং কাজের জন্য রবিবার সকাল থেকেই শিয়ালদা ডিভিশনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। বিশেষত শিয়ালদা-ডানকুনি শাখা এবং শিয়ালদা-বনগাঁ শাখায় যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বিশেষত আজ পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাব-অর্ডিনেট ফুড সাপ্লাইস সার্ভিসে সাব-ইনস্পেক্টর (গ্রেড-থ্রি) নিয়োগের পরীক্ষা আছে। শনিবারের ‘ইতিহাস’ শোনার পরে অনেক চাকরিপ্রার্থীই ট্রেনের পথ এড়িয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু যাঁদের ট্রেন ছাড়া কোনও উপায় নেই, তাঁদের চরম সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। যাত্রীদের দাবি, ওই দুটি লাইনের প্রচুর ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। বনগাঁ শাখার ট্রেনগুলি দমদম ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত আসছে। তারপর ফের বনগাঁর দিকে যাচ্ছে। তুলনামূলকভাবে শিয়ালদা মেন লাইনে পরিষেবা কিছুটা ঠিকঠাক আছে। যে ট্রেনগুলি বাতিল করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল, সেগুলি চলছে না। কিছুটা লেট হলেও বাকি লোকাল ট্রেনগুলি চলছে।
দমদমে নন-ইন্টারলকিংয়ের কাজ ও বাতিল ট্রেন
শিয়ালদা ডিভিশনের অন্যতম ব্যস্ত স্টেশন দমদম জংশনে এতদিন রুট রিলে ইন্টারলকিং ব্যবস্থা ছিল। যা ১৯৯৬ সালে চালু হয়েছিল। সেই পুরনো ব্যবস্থাকে পালটে আধুনিক ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেমের জন্য শুক্রবার মধ্যরাত ১২ টা থেকে দমদম জংশনে কাজ শুরু হয়েছে। সোমবার ভোর চারটে পর্যন্ত সেই কাজ চলবে।
(রবিবার শিয়ালদা লাইনে কোন কোন ট্রেন বাতিল আছে? দেখে নিন পুরো তালিকা ও সময়সূচি)
তার জেরে শনিবার শিয়ালদা ডিভিশনে ১৩০টি লোকাল ট্রেন বাতিল ছিল। রবিবার বাতিল করা হয়েছে ১০৩টি লোকাল ট্রেন। তাছাড়া কয়েকটি এক্সপ্রেস ও মেমু ট্রেনও বাতিল করা হয়েছে। শনিবার এবং রবিবার হলেও দু'দিনই সরকারি চাকরির পরীক্ষা থাকায় দুর্ভোগ চরমে ওঠে চাকরিপ্রার্থীদের। অনেকেরই বক্তব্য, এরকম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার দিন কীভাবে এরকম মেগা কাজ করার সিদ্ধান্ত নিল রেল? ট্রেন তো অনেকেরই ‘লাইফলাইন’। যাঁরা দূর-দূরান্ত থেকে আসেন, তাঁদের সকলের পক্ষে তো কাঁড়ি-কাঁড়ি টাকা খরচ করে গাড়িতে করে আসা সম্ভব নয়।
ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেমের ফলে কী লাভ হবে?
পূর্ব রেলের আধিকারিকদের দাবি, নন-ইন্টারলকিংয়ের কাজের জন্য এই দু'দিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বটে। কিন্তু ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেমের ফলে শিয়ালদা ডিভিশনে লোকাল ট্রেনের পরিষেবা আরও ভালো হবে। দমদম জংশনে রুট রিলে ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় ২২৬টি রুট ছিল। নয়া ব্যবস্থায় সেটা বেড়ে হবে ৩৪৪টি। ফলে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে ট্রেনের গতি। গোলযোগের ঘটনা কমবে। বৃষ্টির সময় কোনও সমস্যা হবে না। সার্বিকভাবে ট্রেনের গতিও বাড়বে বলে দাবি করেছেন পূর্ব রেলের আধিকারিকরা।