একুশের নির্বাচনের পর বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসেই ফিরতে চলেছেন? দলের একটি বৈঠক এড়িয়ে যাওয়ায় তাঁকে ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে। এই প্রশ্ন যখন রাজ্য–রাজনীতিতে উঠতে শুরু করেছে তখন তাতে ইন্ধন জোগালেন তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য যেন সেদিকেই ইঙ্গিত করল। আজ সৌগত রায় প্রকাশ্যেই বলে দিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করলেও শুভেন্দু অধিকারীদের মতো মমতাকে নিয়ে বাজে কথা কখনও বলেননি মুকুল রায়। এই মন্তব্যই এখন জোর চর্চার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে জয়ী হয়ে বিধানসভায় গেলেও মুকুল রায়ের সঙ্গে বিজেপির দূরত্ব না কি ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। তাই অনুগামীদের নিয়ে সল্টলেকের বাসভবনে মাঝেমধ্যেই বৈঠক করছেন মুকুল। এমনকী, সম্প্রতি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও বৈঠক করেছেন মুকুল রায়ের সঙ্গে। যিনি বেসুরো গাইতে শুরু করেছেন। ফলে সদলে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে তাঁরা ফিরবেন কি না, সেই প্রশ্নে জেরবার বিজেপি নেতৃত্ব। বিধানসভা নির্বাচনের আগে একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘মুকুল অত খারাপ নয়। ও বাজে কথা বলে না।’
একুশের নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর গেরুয়া শিবিরের একাধিক বৈঠকে তিনি অনুপস্থিত থেকেছেন। মঙ্গলবার দিলীপ ঘোষের ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়। এই মুকুল রায়ের ফেরা নিয়ে জল্পনা যখন চলছে তখন সৌগত রায় বলেন, ‘অনেকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁরা ফিরে আসতে চাইছেন। কিন্তু আমি মনে করি, প্রয়োজনের সময়ে তাঁরা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন। সকলের বিষয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আমার মতে, বিষয়টিকে দু’টি ভাগে ভাগ করতে হবে— নরমপন্থী এবং কট্টরপন্থী’। এই মন্তব্যও বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ। কারণ মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিলেও সরাসরি কুৎসা করেননি।
এরপরই বর্ষীয়ান তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতারা যেখানে মমতাকে নিয়ে প্রকাশ্যেই বাজে কথা বলেছে, সেখানে মুকুল রায় কখনও মমতাকে নিয়ে কটু কথা বলেননি।’ তাহলে কী মুকুল রায়ের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের দরজা খোলা থাকছে? উত্তরে দমদমের সাংসদ জানান, দলত্যাগীদের ফেরানো নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মমতাই নেবেন।